নবাবগঞ্জ (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলায় বিসিআইসি টিএসপি সার বিতরণ নিয়ে অনিয়ম ও অসচ্ছতার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ডিলার এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার সদর বিনোদ নগর ইউনিয়নের “মেসার্স মন্ডল ট্রেডার্স” নামক ডিলার প্রতিষ্ঠান কৃষকদের কাছে মজুদ থাকা সারের বিষয়টি গোপন রেখে সরবরাহ না করার অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, সরকারি বরাদ্দের বিসিআইসি টিএসপি (পতেঙ্গা) সার থাকার পরেও ডিলার তাদের জানাচ্ছেন যে সার নেই। অথচ সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, টিএসপি সারের কিছু অংশ ডিলার পয়েন্টে না রেখে প্রায় এক দেড় কিলোমিটার দূরে এক দোকান ঘরে রাখা হয়েছে। অথচ বরাদ্দকৃত ১৩.৩ মে.টন সারের পুরোটা কৃষকের কাছে পৌঁছায়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নবাবগঞ্জ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কেরামত আলী বলেন, “আপনি তো সঙ্গেই ছিলেন, দেখেছেন সবাই ঠিক ছিল। তবে শেষে একটু সমস্যা হয়েছিল।” সার কোথায় রাখা হয়েছে এবং কেন ডিলার পয়েন্টে পাওয়া যায়নি—এসব বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তাপস কুমার রায় এক বিস্ফোরক মন্তব্য করেন, তিনি বলেন-“আমরা যারা বিসিএস কর্মকর্তা আছি, আমরা যদি মিথ্যাও বলি, সেটাই সত্যি। কারণ ফাউন্ডেশনে আমাদের তাই শিখিয়েছেন।”এই বক্তব্যে উপস্থিত সবাই হতবাক হন। ডিলার পয়েন্টের পরিবর্তে অন্যত্র সার পাওয়ার ব্যাপারে তিনি জানান, “ডিলার পয়েন্টের স্থান পরিবর্তনের বিষয়ে আমাকে মৌখিক ভাবে বলা হয়েছে, লিখিত কোনো অনুমোদন নেই।”
এ বিষয়ে দিনাজপুর জেলা কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালক আফজাল হোসেন বলেন-“গুদাম পরিবর্তন কিংবা স্থানান্তর করতে হলে অবশ্যই উপজেলা সার ও বীজ মনিটরিং কমিটির অনুমোদন লাগবে। মৌখিক নয়, কাগজে-কলমেই অনুমোদন নিতে হবে।”
এদিকে প্রতিবেদনের তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তা ও ডিলার সাংবাদিককে চাঁদাবাজির অভিযোগে মানহানির মামলার হুমকি দেন।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তারা মনে করছেন, তাদের ন্যায্য প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত করার পেছনে প্রশাসনের কিছু অসাধু কর্মকর্তা রয়েছে।