শনিবার, ২১শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

ইরানের হামলার ভয়ে যুদ্ধবিমান, রণতরী সরিয়ে নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

ইরানের হামলার ভয়ে যুদ্ধবিমান, রণতরী সরিয়ে নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

অনলাইন ডেস্ক

ইরানের সম্ভাব্য হামলার আশঙ্কায় মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি ঘাঁটি থেকে যুদ্ধবিমান ও রণতরী সরিয়ে নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের দুই কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স ও ব্লুমবার্গ।

জানা গেছে, কাতারের রাজধানী দোহার কাছে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বৃহৎ সামরিক ঘাঁটি আল-উদেইদ থেকে বেশ কিছু বিমান সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বাহরাইনের একটি বন্দর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধজাহাজগুলোও (রণতরী) নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে মূলত সম্ভাব্য ইরানি হামলায় বিমান ও জাহাজ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকি এড়াতে।

যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই উদ্যোগ বাহিনীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কৌশলেরই অংশ। যদিও ঠিক কতটি বিমান ও রণতরী সরানো হয়েছে এবং সেগুলো কোথায় নেওয়া হয়েছে, তা প্রকাশ করা হয়নি।

আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেসরকারি স্যাটেলাইট কোম্পানি প্ল্যানেট ল্যাবসের ধারণ করা ছবি বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, আল-উদেইদ ঘাঁটির টারমাকে থাকা বিভিন্ন যুদ্ধবিমান ও পরিবহন বিমানের বেশির ভাগ অনুপস্থিত। যেগুলো আছে, সেগুলোও এলোমেলোভাবে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের এক কর্মকর্তা জানান, যেসব বিমান শক্ত সুরক্ষা চেম্বারে ছিল না, সেগুলো সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে বাহরাইনের যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের পঞ্চম নৌবহর অবস্থান করে, সেখান থেকেও বেশ কয়েকটি রণতরী সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

এই পদক্ষেপ এমন এক সময়ে নেওয়া হলো, যখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এখনো স্পষ্ট করে বলেননি যে, তার দেশ ইসরায়েলের সঙ্গে একত্র হয়ে ইরানের পরমাণু ও ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনায় হামলা চালাবে কি না। হোয়াইট হাউসের বাইরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেছেন, ‘আমি এটা করতে পারি, আবার নাও করতে পারি। কেউ জানে না আমি কী করতে যাচ্ছি।’

এদিকে কাতারে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস বৃহস্পতিবার এক সতর্কবার্তা জারি করেছে। এতে দূতাবাসের কর্মকর্তা ও সেখানে অবস্থানরত নাগরিকদের জন্য অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানানো হয়েছে। সেই সঙ্গে সাময়িকভাবে আল-উদেইদ ঘাঁটিতে দূতাবাসকর্মীদের প্রবেশ সীমিত করা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র বলছে, এ সিদ্ধান্ত কোনো অস্বাভাবিক পদক্ষেপ নয়। বরং এটি বাহিনীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য নিয়মিত সামরিক কৌশলের অংশ। ইরানের সম্ভাব্য হামলা ঠেকাতে বা এর ক্ষতি কমিয়ে আনতেই এ পূর্বপ্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইসরায়েল-ইরান উত্তেজনার মধ্যেই এ ধরনের সতর্ক পদক্ষেপ একদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক প্রস্তুতির ইঙ্গিত দেয়, অন্যদিকে এটি সম্ভাব্য বড় ধরনের সংঘর্ষের আশঙ্কাকেও উসকে দেয়।

Share This

COMMENTS