ঈদকে সামনে রেখে ব্যস্ততা বেড়েছে বীরগঞ্জের কামার পল্লীতে

বীরগঞ্জ (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
আসন্ন কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে দিনাজপুরের বীরগঞ্জে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কামার শিল্পীরা। ঈদের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে কামার শিল্পীদের ব্যস্থতা ততই বাড়ছে। পশু কুরবানিতে ব্যবহৃত দা, বটি, চাপাতি ও ছুরি তৈরিতে ব্যস্থ সময় পাড় করছে তারা, তাই দম ফেলার ও সময় নেই কামারদের। নাওয়া-খাওয়া ভুলে কাজ করছেন কামাররা। কাক ডাকা ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কাজ করে যাচ্ছেন তারা। দম ফেলবারও যেন ফুসরত পাচ্ছেন না তারা। দিনরাত টুং টাং শব্দে মুখরিত বীরগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারগুলো।
চাঁদ দেখার উপর নির্ভর করে আগামী ৭ জুন পবিত্র ঈদল আযহা উপললক্ষে পশু জবাই করতে ব্যবহারিত দেশীয় অস্ত্র বা হাতিয়ার তৈরী ও বিক্রিতে উপজেলা ব্যস্ত সময় পার করছে শত শত কামার। ভিড় জমাচ্ছে সাধারণ মানুষ তাদের কাছে। কেউ কিনছেন, কেউ বাড়িতে থাকা হাতিয়ারগুলো শান দিতে ঘন্টার ঘন্টার পর কামারের দোকানে বসে ধর্না দিচ্ছে। হাতিয়ারগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, ছুরি, চাকু, চাপ্পর, কুড়াল, কানতাই, হাসুয়াসহ ইত্যাদি। গ্রাহকের চাপে ব্যস্ততায় হাঁফিয়ে উঠছেন কামাররা।
সরেজমিনে গিয়ে উপজেলার নিজপাড়া ইউনিয়নের বলরামপুর গ্রামের আনসার আলী কামার জানান, প্রতিবছরের ন্যায় এবারও আমরা প্রায় ১৫দিন আগে থেকেই ব্যস্ত সময় পার করছি। একদিকে সাধারণ মানুষের হাতিয়ারগুলো শান দিয়ে দিতে হচ্ছে, অন্যদিকে বাজারে বিক্রীর জন্য নতুন হাতিয়ার তৈরী করতে হচ্ছে। সামনে ঈদুল আযহারের দিন সকাল আটটা পর্যন্ত এভাবেই ব্যস্তই থাকতে হবে। বছরে মাত্র একবার আমাদের জন্য সুযোগ আসে। এ মৌসুমে প্রায় দেড় লাখ টাকার হাতিয়ার বিক্রী হবে এবং প্রায় এক লাখ টাকার হাতিয়ার শানু দেয়া বাবদ আয় হবে। তারমধ্যে খরচ বাদে প্রায় দুই লাখ লাভ থাকবে। বীরগঞ্জ পৌর বাজারে ফরহাদ, শাহ্ আলম,গোলাপ ও পাতাসহ প্রায় ১০ জন কামারের কাজ করেন। শাহ্ আলম জানান, আমাদের বাপ দাদারাও এ কাজ করতো। আমরাও করছি। ঈদুল আযজা উপলক্ষে চরম ব্যস্ত সময় পার করছি। আশা করি এ মৌসুমে খরচ বাদে এক লাখ টাকা আয় হবে।
কিছু হাতিয়ার তৈরী করে বিক্রী করি। বিক্রী করা হাতিয়ার গুলো হলো লোহার ও কাস্টিন দিয়ে তৈরী করা কোপদা বা চাপাতি ও দাও ছয় শো টাকা দরে বিক্রী করি। হাসুয়া, বড় বটি, হাসুয়া তিন শত টাকা করি, বড় ছুরি ছয় শত থেকে সাত শত ও ছোট হাসুয়া ও বটি দুই শ টাকা করে বিক্রী করছি।