কেরানী থেকে রাতারাতি প্রধান শিক্ষক, অবশেষে সাময়িক বরখাস্ত

পীরগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি
রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার বড় বদনাপাড়া নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এক সময় কেরানী হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হওয়ার পর স্বামীকে সভাপতি বানিয়ে ভুয়া সনদে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ নেয়া সেই প্রধান শিক্ষক মোর্শেদা বেগমকে অবশেষে সাময়িক বরখাস্থ করা হয়েছে।
জানা গেছে, ২০২৩ সালে বিদ্যালয়টি এমপিও ভুক্তির পর প্রভাব খাটিয়ে রাতারাতি তিনি স্বামী রেজাউল করিমকে সভাপতি বানিয়ে নিজে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ নেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটির রিপোর্টে সত্যতা পাওয়ায় বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খাদিজা বেগম তাকে সাময়িক বহিষ্কার করেন। ওই আদেশে বিদ্যালয়টির চলমান কার্যক্রম অব্যাহত রাখার জন্য বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক আতোয়ার রহমানকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
তদন্ত রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়, ২০০৫ সালের প্রধান শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ নেয়ার সময় মোর্শেদা বেগম চতরা ডিগ্রী কলেজ থেকে বিএ পাশ এর যে সনদ প্রদান করেছেন তা সম্পূর্ন ভুয়া। ওই সময় চতরা কলেজে ডিগ্রী কলেজ খোলাই হয়নি। এরপর তিনি ২০১০ সালে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় হতে বিএ পাশের সনদ দাখিল করে পুনরায় ২০১৪ সালে নিয়োগ দেখান। বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জনবল কাঠামোতে উল্লেখ রয়েছে,“নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হতে হলে ইনডেক্সধারী শিক্ষক হিসেবে ১০ বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। এক্ষেত্রেও ২০১০ সালে স্নাতক পাশ করে ২০১৪ সালে নিয়োগ পাওয়ার কোন সুযোগ নেই। তাছাড়া ২০১৪ সালে নিয়োগ সংক্রান্ত কোন প্রমাণপত্রও দেখাতে পারেননি তিনি। তদন্তে আরও উল্লেখ করা হয়, মোর্শেদা বেগমকে উক্ত প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পদে দেখা গেছে। এজন্য মোর্শেদা বেগমের প্রধান শিক্ষক হিসেবে থাকার কোন বৈধতা নেই। তিনি ক্ষমতার জোরে পদটি দখল করে রেখেছেন।
বিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাতা ও জমিদাতা সাবেক ইউপি সদস্য কায়কোবাদ সাবু জানান, ২০১৮ সাল পর্যন্ত আমি সভাপতি ছিলাম। এমপিওভুক্ত না হওয়ায় বছরের পর বছর তালা দেয়া থাকতো স্কুলটিতে। শিক্ষক কর্মচারিরা কেউই আসতো না। এমপিওভুক্তির ঘোষনায় হঠাৎ রাতারাতি আমি কিভাবে সভাপতি পদ থেকে বাদ পড়লাম তা কিছুই জানি না। তিনি আরও বলেন, মোর্শেদা বেগমকে ২০০১ সালে যোগ্যতা না থাকায় আমি কেরানী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছি। সে কিভাবে প্রধান শিক্ষক হয় ?