বুধবার, ১৬ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

গাইবান্ধায় ইপিজেড বাস্তবায়নের দাবিতে প্রধান উপদেষ্টা বরাবরে স্মারকলিপি

গাইবান্ধা প্রতিনিধি
রংপুর বিভাগের প্রবেশদ্বার গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় ইপিজেড দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে আজ মঙ্গলবার জেলা প্রশাসক চৌধুরী মোয়াজ্জম আহমেদের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। গোবিন্দগঞ্জের সর্বস্তরের জনগণের পক্ষ থেকে এই স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
স্মারকলিপি প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় ইউনিট সদস্য ও সাবেক গাইবান্ধা জেলা আমীর ডা: আব্দুর রহিম সরকার, জেলা জামায়াতের আমীর ও সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল করিম সরকার, দৈনিক নয়া দিগন্ত গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি সৈয়দ রোকনুজ্জামান, বাংলাদেশ ইসলামী আন্দোলনের গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা সভাপতি মো. আকরাম হোসেন, শিক্ষা অনুরাগী মো. আবুল হোসেন সরকার, মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, সহকারী অধ্যাপক আশরাফুল ইসলাম রাজু, শিক্ষক মাওলানা মশিউর রহমান, বড়দহ দাখিল মাদ্রাসার সহকারী সুপার মো. শেখ ফরিদ, ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম, অধ্যক্ষ মো. ওয়াজিদুল ইসলামসহ অন্যরা।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, উত্তরাঞ্চলের গেটওয়ে নামে পরিচিত গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় ২০১৯ সালে বেপজা গর্ভণর বোর্ডের ৩৪তম সভায় রংপুর চিনিকলের সাহেবগঞ্জ ইক্ষু খামারের ১৮৪২ একর জমিতে ১০তম ‘রংপুর প্রক্রিয়াজাতকরণ এলাকা’ স্থাপনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। কারণ রংপুর শহরের অদুরে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা থেকে ৬ কিলোমিটার দুরে সাহেবগঞ্জ বাজার এলাকায় প্রস্তাবিত ইপিজেডটির অবস্থান। এই ইপিজেড থেকে সৈয়দপুর বিমানবন্দর ৭০ কিলোমিটার, হিলি স্থল বন্দর ৩২ কিলোমিটার, সম্প্রসারিত বগুড়া বিমান বন্দরের অবস্থান ৩৪ কিলোমিটার দুরে। এছাড়াও ইপিজেড থেকে মহিমাগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনের দূরত্ব ১৭, গাইবান্ধা রেলওয়ে স্টেশনের দূরত্ব ৩২ এবং ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের দূরত্ব মাত্র ৭ কিলোমিটার। যে কারণে যোগাযোগ ও মালামাল সরবরাহ এবং পরিবহনের ক্ষেত্রে এই ইপিজেড অত্যন্ত সুবিধাজনক অবস্থানে থাকায় বেপজা এই স্থান নির্বাচনে গুরুত্ব দিয়েছে। এখানে ইপিজেড বাস্তবায়ন হলে বিভিন্ন ধরণের শিল্প স্থাপন এবং বিদেশী বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ করার দুয়ার খুলে যাবে। এ দেশের উৎপাদিত পণ্য সাধারণত শতভাগ বিদেশে রপ্তানি করা হয়। এরফলে বিশেষ করে বিভিন্ন শিল্প কারখানা স্থাপন হওয়ায় প্রচুর কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। বিশেষ করে নারী শ্রমিকদের জন্য ইপিজেড বাস্তবায়ন হলে তাদেরসহ প্রায় ২ লক্ষ লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। এছাড়া ইপিজেডের মাধ্যমে শিল্পায়ন কর্মসংস্থান এবং রপ্তানি বৃদ্ধি পাবে। ফলে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত হবে।
এজন্য ২০২২ সালের ১০ ডিসেম্বর উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত এক সভায় জানানো হয় ১৮৪২ একর জমির মধ্যে মাত্র ৪৫০ একর জমি বেপজার কাছে হস্তান্তর করে বাকি জমি আইন মেনে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সাঁওতাল-বাঙালিদের মধ্যে লিজ প্রদান করা হবে। এতকিছুর পরেও একটি স্বার্থান্বেষী মহল সাঁওতালদের ব্যবহার করে ইপিজেড নির্মাণে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে। অথচ মোট জমির ৮০ ভাগ জমি মুসলমানদের বাকি ২০ ভাগ জমি হিন্দু, সাঁওতাল ও অন্যদের। প্রস্তাবিত ইপিজেডের আকার মাত্র ২৫৪ একর এবং সংলগ্ন ১৯৬ একর নিয়ে মোট ৪৫০ একর জমি রংপুর চিনিকল কর্তৃক বেপজার কাছে হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত হয়।
এদিকে প্রশাসনিক সকল কার্যক্রম সম্পন্ন হলেও ইপিজেড নির্মাণ কাজ শুরু না হওয়ায় গোবিন্দগঞ্জের ৯৯ ভাগ মানুষ আন্দোলন সংগ্রাম শুরু করেছে। সাধারণ মানুষের কথা এই উপজেলায় প্রায় পৌনে ৫ লক্ষ মানুষের বসবাস। তাই তারা নির্ধারিত স্থানে অপার সম্ভাবনার রংপুর ইপিজেড নির্মাণ কাজ শুরু করার জন্য প্রধান উপদেষ্টার কাছে দাবি জানান।

Share This