চিরিরবন্দরে সাদা সোনা খ্যাত রসুন রোপণে ব্যস্ত কৃষক
চিরিরবন্দর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
খরচের তুলনায় দ্বিগুণ লাভ হওয়ায় মাঠে মাঠে সাদা সোনা খ্যাত রসুন চাষে স্বপ্ন বুনছেন দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার কৃষকেরা। প্রতি বছর উপজেলায় বৃদ্ধি পাচ্ছে রসুন চাষ। রসুন চাষে লাভ হওয়ায় গত কয়েক বছরের তুলনায় এবছর উপজেলায় রসুন চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন রসুন রোপণে ব্যস্ত কৃষকরা। গত বছরের মতো এবার ও ভালো দাম পাওয়ার আশায় কোমর বেঁধে রসুন রোপণে নেমে পড়েছেন চাষিরা।
উপজেলা কৃষিবিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় রসুন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪১৮ হেক্টর জমি এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ হাজার ৩৬৮ মেট্রিকটন। এ পর্যন্ত অর্জিত হয়েছে ৪২৫ হেক্টরজমি।
সরেজমিন উপজেলার নশরতপুর, সাতনালা, তেঁতুলিয়া, আলোকডিহি, ফতেজংপুর, ইসবপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামঘুরে দেখা গেছে, আমন ধান কাটা-মাড়াই শেষে রসুন চাষের জন্য জমি প্রস্তুত, বীজসংগ্রহ ও রোপণ কাজে পুরোদমে পুরুষদের সাথে নারীরাও ব্যস্ত সময় পার করছেন। ৫০ শতকের প্রতিবিঘা জমিতে রসুন চাষে জমি প্রস্তুত, বীজ, সার, সেচ, হাল ও পরিচর্যা বাবদ খরচ হবে প্রায় ৯০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত। আর প্রতিবিঘায় ফলন হয় ৫০-৬০ মণ।
উপজেলার নশরতপুর গ্রামের হেদপাড়ার গোলাম মোস্তফা জানান, প্রতিমণ রসুনের বর্তমান বাজার মূল্য ৫-৭ হাজার টাকা। গত বছর রসুনের বাজারে ভালো দাম পেয়েছি। তাই অনেক আশা নিয়ে এবছর দেড় একর জমিতে রসুন আবাদ করছি। অন্য ফসলের চেয়ে তুলনামূলক লাভ বেশি হওয়ায় বৃদ্ধি পাচ্ছে রসুনের আবাদ।
নশরতপুর গ্রামের বারোঘরিপাড়ার কৃষক স্বপন চন্দ্র রায় বলেন, অন্যান্য ফসলের চেয়ে রসুন অত্যন্ত লাভজনক ফসল। এজন্য পূর্বের মত এবছরও তিনি ১ বিঘা জমিতে রসুন রোপণকরছেন। রোপণের জন্য প্রতিবিঘায় ৭-৮ মণ রসুনের প্রয়োজন হয়। বর্তমানে ভালো রসুনের বীজ ৭-৯ হাজার টাকা পর্যন্ত ক্রয় করেছি। আশাকরছি, ভালো আবহাওয়া ও ফলন পেলে চলতি মৌসুমে এক লাখ টাকা পর্যন্ত লাভ হবে।
উপজেলার নশরতপুর ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. খাদেমুল ইসলাম বলেন, রসুনের ভালো ফলন পেতে কৃষকদের পরামর্শ ও সহায়তা প্রদানে আমরা নিরলস ভাবে কাজ করছি।
উপজেলা কৃষিকর্মকর্তা কৃষিবিদ জোহরা সুলতানা বলেন, উপজেলায় রসুন আবাদ জনপ্রিয় ও অর্থকরী ফসল হয়ে উঠেছে। গত মৌসুমে ভালো দাম পাওয়ায় এবছর লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় অধিক জমিতে রসুন চাষের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবছরও রসুনের ভালো ফলন পাবেন কৃষকেরা। এজন্য পরামর্শ প্রদানে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর মাঠে রয়েছে।