হিলি প্রতিনিধি
মুসলিম সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর। ঈদ মানেই আনন্দ আর ঈদ মানেই বাড়তি ব্যয়। প্রতি বছর ঈদ উৎসব আসলেই সবচেয়ে দুঃশ্চিন্তায় পড়তে হয় বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারীদের। এবারেও তার ব্যতিক্রম কিছু হয়নি। তবে শেষ মূহুর্তে ব্যাংকে বেতন ও বোনাস পৌঁছালেও উত্তোলন করতে না পারার দুশ্চিন্তায় ছিলেন শিক্ষক কর্মচারীরা। কিন্তু সরকারি সিদ্ধান্ত মোতাবেক সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবারে সোনালি ব্যাংক সেবা দেওয়ায় সরকার ও ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানায় ব্যাংকে আসা শিক্ষক কর্মচারীরা। অন্য দিকে স্কুল কলেজের শিক্ষক কর্মচারীদের চলতি মার্চ মাসের বেতন না পাওয়ায় কিছুটা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারা।
আজ শুক্রবার সকাল দশটায় সোনালী ব্যাংক হাকিমপুর শাখায় সরজমিনে শিক্ষক কর্মচারী ও ব্যাংকের ম্যানেজার সাথে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া যায়। জানা গেছে, উপজেলার ২৪ টি এমপিও ভুক্ত স্কুল ১১ টি মাদ্রাসা ও সরকারি সহ ৩টি কলেজ রয়েছে।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ব্যাংকের নিচ তলায় সারি সারি মোটরসাইকেল পার্কিং করে রেখেছে শিক্ষকরা। পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে সকাল থেকে সরব হাকিমপুর সোনালী ব্যাংক। ভেতরে গিয়ে দেখা যায় সুন্দর সুষ্ঠ ও উৎসব মুখোর পরিবেশে শিক্ষক কর্মচারীরা তাদের বেতন ও ঈদ বোনাস উত্তোলন করছেন ব্যাংক থেকে। আবার নিরলস ভাবে সেবা দিতে দেখা গেছে ব্যাংকের লোকজনকে।
চলতি মার্চ মাসের বেতন ও ঈদের বোনাস তুলতে আসা রিকাবী চকচকা আলিম মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. ইদ্রিস আলী বলেন, আর মাত্র কয়েক দিন পরে ঈদ। বেতন ও বোনাস নিয়ে চিন্তায় ছিলাম। বৃহস্পতিবার বিকেলে ব্যাংকে বেতন পৌঁছালে ভেবেছিলাম ঈদের আগে তুলতে পারবো না। তবে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি বর্তমান সরকার প্রধান ও শিক্ষা উপদেষ্টাকে। পাশাপাশি আন্তরিক ধন্যবাদ জানায় সোনালী ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে সেবা প্রদানের জন্য।
ঈদের বোনাস নিতে আসা হাকিমপুর মহিলা কলেজের কর্মচারী রবিউল ইসলাম বলেন, আর মাত্র দুই দিন পরে ঈদ। বাড়িতে ছেলে মেয়েদের কেনাকাটা করতে পারি নাই। আমরা চলতি মার্চ মাসের বেতন ও পাই নাই। বোনাস এসেছে গতকাল বৃহস্পতিবার শেষ সময়ে। অথচ মাদ্রাসা শিক্ষক কর্মচারীরা মার্চের বেতন ও পাচ্ছেন। তাহলে কি আমাদের সাথে বৈষম্য হলো না। তারপর ও ধন্যবাদ জানাচ্ছি সোনালী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ কে ছুটির দিনে সেবা প্রদানের জন্য। তাই বোনাস তুললাম এ দিয়ে যা হয়।
উপজেলার নন্দীপুর ডিএস দাখিল মাদ্রাসার সহ-সুপার মোতালেব হোসেন বলেন, আমার চাকরি জীবনে এটাই প্রথম, মাস শেষ না হতেই চলতি মাসের বেতন ও সাথে ঈদ বোনাস ব্যাংকে পৌঁছেছে। আরও আবাক হচ্ছি ছুটির দিনে শিক্ষক কর্মচারীরা তাদের বেতন বোনাস তুলতে পারছে। অসংখ্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি বর্তমান সরকার প্রধান, শিক্ষা উপদেষ্টা ও ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে।
হাকিমপুর সোনালী ব্যাংককের ম্যানেজার মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, সোনালি ব্যাংক বিশাল রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংক। সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক কাজ আমরা করে থাকি। পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারীদের অনেকের চলতি মাসের বেতন সহ ঈদের বোনাস গতকাল বৃহস্পতিবার চারটার দিকে ব্যাংককে পৌঁছায়। এসময় তাঁদের একাউন্টে দেওয়া সম্ভব হয় নাই। তাই সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক ব্যাংকের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২ টা শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন ভাতা ও বোনাস প্রদান করা হচ্ছে। সকাল থেকে শিক্ষক কর্মচারীদের ব্যাংকে স্বতঃস্ফুর্ত উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে বলে জানান তিনি।