ধান-চাল সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রা ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা
বীরগঞ্জ (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
দিনাজপুরের বীরগঞ্জে সরকারি খাদ্য গুদামে ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হচ্ছে না মর্মে ধারনা করছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাসহ ব্যবসায়ীরা। উপজেলার ২টি খাদ্য গুদামে লক্ষ্যমাত্রা ধান ১২৬০ মে. টন এবং চাল ৮২২ মে. টন। সরকার নির্ধারিত মূল্যের সাথে বাজার মূল্য অনেক বেশী হওয়ায় আভ্যন্তরিন আমন মৌসুমে ধান চাল সংগ্রহ অভিযান ব্যর্থ হতে চলেছে।
ব্যবসায়ী ও মিলারেরা সরকারের সাথে চুক্তি আবদ্ধ হলেও তারা চুক্তি অনুযায়ী খাদ্য গুদামে ধান-চাল সরবরাহ করতে পারছেন না। সরকারীভাবে বীরগঞ্জ এবং কবিরাজহাট খাদ্য গুদামে গত ১৭ নভেম্বর’২০২৪ তারিখে একই সঙ্গে ধান চাল সংগ্রহের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়েছে।
ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান জানান, প্রায় শতাধিক মিলার চুক্তিবদ্ধ থাকলেও এখনো লক্ষ্যমাত্রার শতকরা ১৫ ভাগ সংগ্রহ হয় নি, অটো রাইস মিলগুলো অল্পকিছু সরবরাহ করলেও হাসকিং মিলাররা করছেন না। তাছাড়া একজন কৃষকও বিক্রির জন্য গোডাউনে আসেন নাই।
বীরগঞ্জ উপজেলা খাদ্য পরিদর্শক ও ভারপ্রাপ্ত সরকারি গুদাম কর্মকর্তা জানান, এবার বীরগঞ্জ সরকারি গোডাউনে ৮২২ মেট্রিক টন চাল এবং ১২৬০ মেট্রিক টন ধান ক্রয়ের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। গত নভেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহের ১৭ নভেম্বর -২০২৪ সরকারিভাবে ক্রয় উদ্বোধন হয়। কিন্তু গুদামে ১২৯ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহ হলেও কেউ ধান বিক্রয় না করায় উদ্বোধন করা সম্ভব হয়নি।
উপজেলায় ৪৫ জন তালিকাভুক্ত মিলার রয়েছে। তারা কিছু কিছু চাল আনছেন। তাদের সাথে প্রায় প্রতিদিন যোগাযোগ করছেন খাদ্য কর্মকর্তাগণ। ধান চাল সরবরাহের তাগিদ ও অনুরোধ জানানো হচ্ছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, শতভাগ না হলেও ৫০শতাংশ ধান চাল মিলারদের কাছে চাওয়া হলেও সন্তোষজনক সাড়া পাওয়া যাচ্ছেনা।
সরকার ১ কেজি চালের দাম ৪৭ টাকা নির্ধারণ করেছে অথচ তা উৎপাদন করতে খরচ পড়ে ৫০/৫২ টাকা বলে জানিয়েছেন মিলার ও কৃষরা। এর সাথে ক্রয় কেন্দ্রে আনা নেওয়া ও শ্রমিক খরচে লোকসান হয় ৬/৭ টাকা। সরকার ধানের দর ৩২ টাকা কেজি নির্ধারণ করেছেন। অথচ এর চেয়ে বেশি দাম হাটবাজারে। মোদ্দা কথা খোলা বাজারের ধান চালের মূল্যের সাথে সরকারি ক্রয় কেন্দ্রের তারতম্যের কারণে মিলাররা ও কৃষকরা সরকারি ক্রয় কেন্দ্রে ধান চাল সরবরাহে দারুন অনিহা দেখাচ্ছে। এতে করে বীরগঞ্জ সরকারি গোডাউনে ধান চাল সংগ্রহ অভিযান বিশেষভাবে ব্যাহত হতে পারে।
বিশিষ্ট ধান চাউল ব্যবসায়ী ও মিলার সাইদুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, চুক্তিবদ্ধ হলে কি হবে খোলা বাজারে সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে ধান ও চালের মূল্য প্রতি কজিতে ৫-৭ টাকা বেশী। তাই ধান চাল সরবরাহকারী তথা মিলাররা চরম বিপাকে, তারা মনে করেন সরকারী মূল্য পুনঃনির্ধারণ না করলে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব নয়।