নবাবগঞ্জে সরকারি হাসপাতালে মিলছে না কাঙ্ক্ষিত সেবা, ভোগান্তিতে আড়াই লাখ মানুষ

নবাবগঞ্জ (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
প্রায় আড়াই লাখ মানুষের কাঙ্ক্ষিত সেবা মিলছে না দিনাজপুর নবাবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। চিকিৎসক সংকটের কারণে ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসা সেবা। ফলে হাসপাতালে এসে কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছেন না রোগীরা। সরকারি হাসপাতালে যথাযথ চিকিৎসা না পেয়ে তিন গুন টাকা ব্যয় করে অনেকেই ছুটছেন বে-সরকারি ক্লিনিকে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, হাসপাতালে মোট চিকিৎসক ১৯ জন তার মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে শূন্য পদে রয়েছে ১৫ জন । বর্তমানে ৩ জন চিকিৎসকের মধ্যে ২ জন মেডিকেল অফিসার ও ১জন ডেন্টাল সার্জন রয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়- প্রত্যন্ত অঞ্চলের দূরদূরান্ত থেকে প্রতিনিয়ত চিকিৎসা সেবা নিতে আসে সরকারি হাসপাতালে ,বহির্বিভাগে প্রায় ৩৫০থেকে ৪০০ রোগী। জরুরি বিভাগে ২৪ ঘন্টায় প্রায় ৬০ থেকে ৭০ জন রোগী। এছাড়াও ৩১ শয্যা হাসপাতাল হলেও পুরুষ ও মহিলা প্রতিনিয়ত ভর্তি থাকেন প্রায় ৪৫ থেকে ৫০ জন রোগী। এত সংখ্যক রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন কর্মরত ডাক্তারা ।
বিনোদনগর ইউনিয়নের নারায়নপুর গ্রামের সেবা নিতে আসা সেলিম রেজা বলেন, আমাদের নবাবগঞ্জ উপজেলা থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত দিনাজপুর জেলা শহর। এদিকে ৬০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত রংপুর জেলা শহর। উপজেলা থেকে জেলা শহর দূরে হওয়ায় এখানকার মানুষের একমাত্র ভরসা এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। তাই দ্রুত এখানে ডাক্তারের ব্যবস্থা করা হোক।
দাউদপুর ইউনিয়নের হেয়াতপুর গ্রামের চিকিৎসা সেবা নিতে আসা খালেদা আক্তার জানান, ১০০ থেকে ২০০ টাকা খরচ করে আসতে হয় হাসপাতালে। এসে দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও কাঙ্খিত সেবা মেলে না ডাক্তারের অভাবে। তিনি আরো বলেন, অপারেশন , এক্স-রে এবং আলট্রাসনোগ্রাম থাকলেও বাইরে গিয়ে তিনগুণ টাকা বেশি দিয়ে করতে হয়। খরচ করে এসেও সেবা মেলে না ডাক্তারের অভাবে, তাই দ্রুত ডাক্তার দেওয়া হোক।
বিনোদ নগর ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আশরাফুল হক বলেন, আমাদের একমাত্র চিকিৎসা সেবা নেওয়ার জায়গা এই উপজেলা হাসপাতাল। কিন্তু ডাক্তারের অভাবে সঠিক ভাবে সেবা পাচ্ছি না উপজেলা বাসী । নিয়মিত ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে রোগীদের। দারিদ্র অসহায় মধ্যবিত্ত মানুষগুলোর কথা ভেবে আমরা চাই অতি দ্রুত চিকিৎসক দেওয়া হোক নবাবগঞ্জ হাসপাতালে।
নবাবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ডা. সোলাইমান হোসেন মেহেদী বলেন, আমরা সাধ্যমত চেষ্টা করে যাচ্ছি রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেওয়ার । ২৪ ঘন্টা জরুরি বিভাগ চালু থাকে। তবে জনবল কম থাকায় রোগীরা কাঙ্খিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে ।
দিনাজপুর সিভিল সার্জন কর্মকর্তা ডা. আসিফ ফেরদৌস উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চিকিৎসক সংকটের কথা স্বীকার করে বলেন, আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য মৌখিক ও লিখতভাবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে জানিয়েছি।