রবিবার, ২২শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

পঞ্চগড়ে শিশির ঝরছে বৃষ্টির মতো গাড়ি চলছে হেডলাইট জ্বালিয়ে


পঞ্চগড় প্রতিনিধি
হিমালয়ের কোলঘেঁষে থাকা উত্তরের জনপদ পঞ্চগড়ে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির মতো ঝরছে শিশির। ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে জেলা বাসিন্দারা। ঘন কুয়াশায় শহরের সড়কগুলোতে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। একই চিত্র গ্রামের সড়কগুলোতেও। খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন অনেকেই। আজ শনিবার সকাল ৯টায় পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ১০০ শতাংশ। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ১২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। জেলার প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার তেঁতুলিয়া অফিস এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্র নাথ জানান, গত শুক্রবার থেকে কুয়াশার আবরণে ঢাকা পড়েছে উত্তরের এ জেলা। আজ কুয়াশা বেশি পড়েছে। তবে তাপমাত্রা ১২ ডিগ্রির মধ্যেই রেকর্ড হচ্ছে। সকাল ৯টায় তাপমাত্রা ১২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছে। গত শুক্রবার সকাল ৯টায় ১২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছিল।
বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ঘন কুয়াশার কারণে সড়কগুলোতে হেডলাইট জ্বালিয়ে গতি কমিয়ে চলাচল করছে দূরপাল্লার বাস ও মিনিবাস, সিএনজি, ইজিবাইক ও মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহন। কুয়াশার সঙ্গে হিমেল বাতাসের কারণে প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হচ্ছেন না অনেকেই। তবে খেটে খাওয়া মানুষ জীবিকার তাগিদে সকালেই বেরিয়েছেন কাজে। সকালে কাজে যেতে দেরি হলে মহাজন কাজে নিতে চান না এমন অভিযোগ অনেক দিনমজুর ও পাথর শ্রমিকদের।
স্থানীয়রা বলছেন, আজ খুবই ঠান্ডা পড়েছে। তার মধ্যে ঘন কুয়াশার কারণে অন্ধকারের মতো লাগছে। হাত-পা অবশ হয়ে আসছে ঠান্ডার কারণে। বিশেষ করে এ এলাকাটি বরফের পাহাড় হিমালয়-কাঞ্চনজঙ্ঘার কাছাকাছি হওয়ায় এখানে এ সময়ের প্রচণ্ড শীতে কাঁপতে হয় আমাদের। রাতে গায়ে কাঁথা-কম্বল নিতে হচ্ছে। মনে হচ্ছে পৌষ মাসের ঠান্ডা শুরু হয়েছে।
তেঁতুলিয়ার মাগুড়া গ্রামের শামসুল হক বলেন, আজ মনে হচ্ছে ঠান্ডাটা বেশি পড়েছে। রাতে প্রচণ্ড ঠান্ডা লেগেছে। ভোরে দেখছি ঘন কুয়াশা। শিরশির করে ঝরছে শিশির।
পাথর শ্রমিক কামাল-নাসির বলেন, ‘কুয়াশার কারণে কাজে যেতে মন না চাইলেও যেতে হচ্ছে। প্রচণ্ড ঠান্ডায় কাঁপলেও জীবিকার তাগিদে পরিবারের কথা চিন্তা করে কাজে বের হয়েছি। কাজ না করলে কী খাবো?’
ভ্যানচালকরা বলছেন, আজ ঠান্ডা বেশি। তার মধ্যে কুয়াশায় কিছু দেখা যাচ্ছে না। ঠান্ডার মধ্যে সহজে ভ্যানে কেউ চড়তে চান না। কিন্তু কী করবো এই ভ্যান চালিয়ে আমাদের চলতে হয়। এখন পর্যন্ত শীতের কাপড় কিনতে পারিনি। শীতের কারণে জ্বর-সর্দি, কাশিতেও ভুগছি।
স্কুলশিক্ষার্থী তরিকুল ইসলাম বলেন, গতকালের চেয়ে আজকে কুয়াশা পড়েছে অনেক। ঠান্ডাও লাগছে বেশ। কোচিংয়ে বের হয়েছি। ঠান্ডা লাগছে।’
এদিকে, শীতের কারণে বেড়েছে শীতজনিত বিভিন্ন রোগব্যাধি। পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতাল ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে বাড়ছে শীতজনিত রোগীদের ভিড়। শিশু ও বয়স্করা সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।

Share This