পঞ্চগড়ে সাবেক রেল মন্ত্রীসহ তিন এমপি, ডিসি ও এসপির বিরুদ্ধে হত্যা মামলা

পঞ্চগড় প্রতিনিধি
পঞ্চগড়ে বহুল আলোচিত বিএনপি নেতা আব্দুর রশিদ আরেফিন হত্যার ঘটনায় আদালতে মামলা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার বিকেলে পঞ্চগড় সদর থানা পুলিশকে মামলাটি তদন্ত সাপেক্ষে এজাহার হিসেবে গন্য করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল সোমবার পঞ্চগড় চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে (আমলি আদালত-১) আরেফিনের স্ত্রী শিরিন আক্তার বাদি হয়ে এই হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবি এডভোকেট আব্দুল ওহাব মামলাটির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার আর্জি ও আইনজীবী সূত্রে জানা যায়, এই মামলায় ১৫৪ জনকে আসামী করা হয়েছে । এদের মধ্যে প্রধান আসামী হচ্ছে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক আনোয়ার সাদাত সম্রাট, পঞ্চগড় ১ ও ২ আসনের সাবেক তিন সংসদ সদস্য এডভোকেট নূরুল ইসলাম সুজন, নাঈমুজ্জামান মুক্তা, মজাহারুল হক প্রধান, সাবেক জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান শেখ, তৎকালীন জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলাম, তৎকালীন পুলিশ সুপার এস এম সিরাজুল হুদা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কনক কুমার দাস, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এস এম শফিকুল ইসলাম, তৎকালীন পঞ্চগড় সদর থানার ওসি আব্দুল লতিফ, সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম, সাবেক মেয়র জাকিয়া খাতুন, পঞ্চগড় পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর পাঁচজন হাসনাত হামিদুর রহমান, লুৎফর রহমান, মোস্তফা কামাল, আরিফুর রহমান, আশরাফুল ইসলাম সহ আওয়ামী লীগের নেতা কর্মী ১৫৪ জনকে আসামী করা হয়েছে। মামলায় ৪’শ থেকে ৭’শ জন কে অজ্ঞাত আসামী করা হয়েছে।
জানা যায়, ২০২২ সালের ২৪ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ, নির্বাচনকালীন তত্বাবধায়ক সরকার, নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের প্রতিবাদে কেন্দ্র ঘোষিত গণমিছিল কর্মসূচির অংশ হিসেবে পঞ্চগড়ে বিএনপি নেতাকর্মীরা মিছিল বের করলে পুলিশ এবং আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা বাধা দেয় । সেই সাথে মিছিলে লাঠিচার্জ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করলে সংঘর্ষ বাধে । এসময় আওয়ামী লীগ কার্যালয় থেকে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা লাঠিসোটা নিয়ে বিএনপির মিছিলে হামলা করে। সংঘর্ষে প্রায় পঞ্চাশজন নেতাকর্মী আহত হয়। পঞ্চগড়-তেঁতুলিয়া মহাসড়কের বিএনপি পার্টি অফিস এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয় । এসময় বোদা উপজেলার ময়দানদিঘী ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক আব্দুর রশিদ আরেফিনের মৃত্যু হয়।
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক ও জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি মির্জা নাজমুল ইসলাম কাজল জানান, কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসেবে সেদিন বিএনপির সহস্রাধিক নেতাকর্মী শান্তিপূর্ণ ভাবে দলীয় কার্যালয়ের সামনে মিছিল করছিল। হঠাৎ করেই পুলিশ এবং আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা বিএনপির এই মিছিলে হামলা করে। পুলিশ টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করে। লাঠিপেটা করে। পার্টি অফিসের কাছেই আরেফিনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় আরেফিনের স্ত্রী বাদী হয়ে আদালতে মামলা করেছে। আদালত তদন্ত সাপেক্ষে মামলা এজাহারভুক্ত করার জন্য সদর থানা পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছে।