রবিবার, ৬ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

পবিত্র আশুরা আজ: শোক, ত্যাগ ও শিক্ষা গ্রহণের দিন

নিজস্ব প্রতিবেদক
আজ ১০ মহররম, পবিত্র আশুরা। হিজরি সনের প্রথম মাস মহররমের দশম দিনটি ইসলামী ইতিহাসে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার স্মারক হিসেবে বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের কাছে বিশেষ মর্যাদাপূর্ণ। ‘আশুরা’ শব্দটি এসেছে আরবি ‘আশারা’ থেকে, যার অর্থ দশ।
ইতিহাসবিদ ও ইসলামি পণ্ডিতদের মতে, সৃষ্টি শুরু থেকে আশুরা দিনে ঘটেছে অনেক তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। এদিনেই মহান আল্লাহতায়ালা আরশ, কুরসি, লওহ, কলম, আসমান ও জমিন সৃষ্টি করেন। এ দিনেই হজরত আদম (আ.)-কে সৃষ্টি ও পরে পৃথিবীতে প্রেরণ করা হয়। একই দিনে হজরত নূহ (আ.)-এর কিশতিকে তুফান থেকে রক্ষা করা হয়, হজরত ইব্রাহিম (আ.) জন্মগ্রহণ করেন, এবং হজরত মূসা (আ.) ফেরাউনের জুলুম থেকে বনি ইসরাইল জাতিকে মুক্ত করেন।
তবে আশুরা স্মরণীয় হয়ে আছে কারবালার হৃদয়বিদারক ঘটনার জন্য। ফোরাত নদীর তীরে ইরাকের কারবালায় এই দিনে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রিয় দৌহিত্র ইমাম হোসাইন (রা.) ও তাঁর পরিবার-পরিজন শাহাদতবরণ করেন। জুলুম-নির্যাতনের বিরুদ্ধে আপসহীন অবস্থান ও সত্যের পথে অবিচল থাকার এক অনন্য নজির স্থাপন করেন তিনি। কারবালার এ ঘটনার মাধ্যমে মুসলিম জাহানে শোক, ত্যাগ ও আত্মবলিদানের এক গৌরবময় দৃষ্টান্ত তৈরি হয়।
আশুরা উপলক্ষে আজ বাংলাদেশসহ বিশ্বের মুসলিমরা রোজা, নামাজ, কোরআন তেলাওয়াত ও দোয়া-মাহফিলসহ নানা নফল ইবাদতের মধ্য দিয়ে দিনটি পালন করছেন। এ উপলক্ষে দেশে সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
বিশেষভাবে শিয়া সম্প্রদায়ের অনুসারীরা আশুরা উপলক্ষে তাজিয়া মিছিল, মাতম ও বিশেষ অনুষ্ঠান আয়োজন করে থাকেন।
ইবাদতের তাৎপর্য:
রাসুলুল্লাহ (সা.) আশুরা দিবসে রোজা রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। হাদিসে এসেছে, আশুরার রোজায় বিগত এক বছরের গুনাহ মাফ হয়ে যায়। হজরত আবু হুরায়রা (রা.)-এর বর্ণনা অনুযায়ী, রাসুল (সা.) বলেছেন, “রমজানের পর সর্বোত্তম রোজা হলো মহররম মাসের রোজা।”
আজকের এ দিনটি আমাদের শিখিয়ে দেয়, অন্যায়, জুলুম ও মিথ্যার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা, আত্মত্যাগ করতে প্রস্তুত থাকা, এবং সত্য ও ন্যায়ের পথে অটল থাকার এক অনন্য শিক্ষা।

Share This

COMMENTS