পীরগঞ্জ(রংপুর)প্রতিনিধি
রংপুরের পীরগঞ্জে মসজিদ ও মাদ্রাসা উচ্ছেদ করে সেই জমি দখলে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার চতরা ইউনিয়নের সোনাতলা ঝাকিয়াপাড়া গ্রামে এ ঘটনায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোন মুহুর্তে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী। ওই ঘটনায় দারুস সুন্নাহ ক্বওমী একাডেমী মাদ্রাসা ও এতিমখানার মোহতামিম হাফেজ মাওলানা আমীর হামজা থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালে উপজেলার চতরা ইউনিয়নের সোনাতলা গ্রামের ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণ দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মাণের উদ্যোগ নিলে একই গ্রামের মৃত লাল মিয়া শেখের ছেলে রফিকুল ইসলাম ২৪ শতক জমি মসজিদ ও মাদ্রাসায় দান করেন এবং দলিল করে দেন। ২০২৪ সালে ওই স্থানে মাটি ভরাটের পর তুরস্ক সরকারের অর্থায়নে সেখানে মসজিদ ও মাদ্রাসা নির্মাণের পর দ্বীনি শিক্ষা কার্যক্রম চলতে থাকে। পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্ত ৬৩ শতক জমিতে মৃত লাল মিয়া শেখের ২ ছেলে রফিকুল ইসলাম ও আব্দুল হাই শেখ স্ব স্ব সীমানায় দীর্ঘ কয়েক যুগ ধরে ভোগ দখল করছেন। সড়ক সংলগ্ন রফিকুল ইসলামের সীমানাতেই নির্মাণ হয় মসজিদ ও মাদ্রাসা। হঠাৎ করে গত ডিসেম্বর মাসে আব্দুল হাই শেখ তার ভোগ দখলীয় সীমানার পরিবর্তে ভাই রফিকুলের দান করা মসজিদ ও মাদ্রাসার স্থানে তার সীমানা দাবি করে জায়গা ছেড়ে দিতে বলেন। কয়েকদিন পর আব্দুল হাই শেখ তাঁর স্বজন ও ভাড়াটে লোকজনসহ দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে মসজিদ ও মাদ্রাসায় গিয়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ভয় ভীতি প্রদর্শণ। এতে ভীত হয়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা মাদ্রাসা ছেড়ে চলে যায়। এই সুযোগে মহেন্দ্র ট্রলিতে মাটি এনে অর্ধশতাধিক স্তুপ তৈরী করেন এবং সেখানে নিজস্ব ভবন নির্মাণের জন্য কয়েক হাজার ইটও রাখা হয়। বর্তমানে মসজিদ ও মাদ্রাসার ঘর অনত্র সরিয়ে নিতে হুমকি প্রদর্শন করা হচ্ছে।
ওই গ্রামের বাসিন্দা আবু শ্যামা ও ওমর ফারুক জানান, কয়েকটি গরু, ছাগল কুরবানি দিয়ে আশে পাশের কয়েক হাজার ধর্মপ্রাণ মুসলমান উৎসবের আমেজ নিয়ে এখানে মসজিদ ও মাদ্রাসা নির্মাণ করে। আব্দুল হাই শেখ পারিবারিক সম্পত্তি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে মসজিদ ও মাদ্রাসার উপরে ক্ষোভ দেখাচ্ছে। কয়েকমাস ধরে দ্বন্দ্ব নিরসনের চেষ্টা করছে এলাকাবাসী। যে কোন সময়ে রক্তক্ষয়ি সংঘর্ষ দেখা দিবে। গ্রামের মানুষ আব্দুল হাই শেখের উপরে প্রচন্ড ক্ষিপ্ত। উনি এর আগেও গ্রামের আরো একটি মসজিদ অনত্র সরাতে বাধ্য করেছিলেন।
আব্দুল হাই শেখ কথা বলতে রাজি না হলেও তাঁর ছেলে শামীম শেখ জানান, আমাদের নিজস্ব জায়গায় আমরা মাটি ও ইট ফেলেছি। দারুস সুন্নাহ ক্বওমী একাডেমী মাদ্রাসা ও এতিমখানার মোহতামিম হাফেজ মাওলানা আমীর হামজা জানান, মাদ্রাসার মাঠে মাটি ও ইট ফেলায় বর্তমানে প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার পরিবেশ নাই। সেই সাথে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের হুমকি ধমকি দেয়ায় তারাও প্রাণভয়ে প্রতিষ্ঠানে আসছেন না।
পীরগঞ্জ থানার ওসি এম.এ ফারুক জানান, অভিযোগ পেয়েছি, একজন কর্মকর্তাকে তদন্ত করতে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তদন্ত শেষে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। আইন শৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশি নজরদারি রয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খাদিজা বেগম জানান, ওসি এবং উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে জরুরী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।