প্রান্তিক জাতিগোষ্ঠীর নারীদের স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ক আলোচনা ও স্বাস্থ্য সামগ্রী বিতরণ

গাইবান্ধা প্রতিনিধি
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার হিলালী পাড়ায় জনউদ্যোগের আয়োজনে রোববার বিকেলে প্রান্তিক নারী-কিশোরীদের স্বাস্থ্য সেবা বিষয়ক আলোচনা ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ করা হয়। এ কর্মসূচিতে আদিবাসী কিশোরী ও তাদের অভিভাবকরা অংশগ্রহণ করেন।
আদিবাসী কিশোরী স্বরস্বতি পাহাড়ী সভাপতিত্বে আলোচনা সভার শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জনউদ্যোগের সদস্য সচিব প্রবীর চক্রবর্তী। আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন পরিবেশ উন্নয়ন কর্মী রেশমা পারভীন, কিশোরীদের মধ্যে সোনালী মার্ডি, সাধনা রানী, সোনালী রানী, আলবীনা মূর্মূ, সরস্বতী পাহাড়ীয়া, মিতু পাহাড়ীয়া, সোনালী মার্ডী, পুর্নিমা তাম্বুলী, রিমা রবিদাস প্রমুখ।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, নারীর জীবনে কিশোরীকাল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শৈশবকাল থেকে পরিপূর্ণ নারী হবার মধ্যবর্তী সময় কিশোরীকাল। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে ১০ বছর থেকে ১৯ বছরের মধ্যবর্তী সময়কালকে কিশোরী বা বয়সন্ধীকাল বলে। এই সময়ে শরীরের বাহ্যিক এবং অভ্যন্তরীন বেশ কিছু পরিবর্তন সাধিত হয়। বাহ্যিকভাবে মেয়েদের উচ্চতা বাড়ে, শরীরের বিভিন্ন অংশে পরিবর্তন আসে এবং প্রজননতন্ত্র পরিপক্ক হতে থাকে। এই সময়ে শারীরিক পরিবর্তনের সাথে সাথে মানসিকতার যথেষ্ট পরিবর্তন হয়। বয়ঃসন্ধীকালীন সময়ে মেয়েদের আত্মপরিচয় গড়ে উঠতে শুরু করে। হরমোনের প্রভাবের কারণে আবেগের প্রাবল্য দেখা দেয়।
বক্তরা আরো বলেন, এই সময় পুষ্টির চাহিদা শারীরিক এবং মানসিক পরিবর্তনে ইতিবাচক ভূমিকা রাখে। এজন্য সুষম খাবার প্রাপ্যতার ক্ষেত্রে অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে। পাশাপাশি আমাদের দেশে বিরাট একটি অংশ দারিদ্রতার চরম সীমায় অবস্থান করে বিশেষ করে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী, আদিবাসী, দলিত কিশোরীরা যাতে চাহিদামাফিক পুষ্টি পায় সেক্ষেত্রে সরকার, এনজিও, দাতা সংস্থাসমূহকে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
পরিশেষে শারীরিক পরিবর্তন, মানসিক পরিবর্তনসমূহ আসার আগে থেকেই কিশোরী এবং অভিভাবক উভয়ই যাতে এ ব্যাপারে সচেতন হতে পারে সেই ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। পুষ্টির চাহিদা পূরণ, স্বাস্থ্যসম্মত ন্যাপকিনের ব্যবহার, প্রজননন স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন নাগরিকই পারে একটি কিশোরীবান্ধব সমাজ তৈরি করতে। একই সাথে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে সবাইকে এক সাথে কাজ করতে হবে। সবশেষে ৫০ জন কিশোরীর মাঝে স্যানেটারী ন্যাপকিন বিতরণ করা হয়।