নিজস্ব প্রতিবেদক
দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে শ্রদ্ধা নিবেদন, স্মৃতিচারণ ও দোয়ার মাধ্যদিয়ে গণহত্যা দিবস পালন করা হয়েছে। এ উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার (১৭ইএপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০ টারদিকে উপজেলার আলাদীপুর ইউনিয়নের বারাই আঁখিরা গণহত্যা বদ্ধভুমির স্মৃতিস্তম্ভে ফুলদিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইসাহাক আলী।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই, ইউপি সদস্য মানিক মন্ডল, বিশিষ্ট ব্যাবসায়ী মিজানুর রহমান। পরিশেষে গনহত্যায় সকল শহিদের মাগফিরাত কামনায় দোয়া করা হয় ।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাসেম সেই সময়ের স্মৃতিচারন করে বলেন, এ জায়গায় গহিন জঙ্গল ছিল, পকুরটি অনেক বড় ছিল। এই জঙ্গলের পুকুরে কুখ্যাত রাজাকার কেনান সরকার একসাথে প্রায় দুই থেকে আড়াইশ নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোর, যুবককে পাকিস্থনি সেনাবাহিনীর মাধ্যমে ব্রাশফায়ার করে মেরে ফেলন। আমরা যুদ্ধকালিন একসময় এখানে এসে সেসব মৃতদেহ ও কাংকাল আশে পাশের বিভিন্ন স্থানে সমাহিতকরি। অকের মাথার খুলি, হাড়-হাড্ডি বিভিন্ন জায়গায় পড়ে থাকলে সেগুলো স্থানীয় মানুষদের মাধ্যমে এই আখিরা কুড়িতে সমাহিত করা হয়।
১৯৭১ সালের ১৭এপ্রিল এই দিনে উপজেলার আলাদীপুর ইউনিয়নের বারাইহাট থেকে ২০০ গজ দক্ষিণে আঁখিরা নামক পুকুর পাড়ে পাকিস্থানি সেনাদের হাতে প্রাণ হারায় ভারতে আশ্রয় নিতে যাওয়া ফুলবাড়ী, নবাবগঞ্জ, পার্বতীপুর ও বদরগঞ্জ উপজেলার ৫০টি পরিবারের প্রায় দেড় শরঅধিক নারী-পুরুষ ও শিশু। তাদেরকে ফুলবাড়ী সীমান্ত দিয়ে নিরাপদে ভারতে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে সেই স্থানে নিয়ে আসে পার্শ্ববর্তী পার্বতীপুর উপজেলার (বর্তমান ফুলবাড়ী) রামচন্দ্রপুর গ্রামের কুখ্যাত রাজাকার কেনান সরকার। কিন্তু কেনান সরকার ঐ পরিবারগুলোকে ভারতে পৌঁছে না দিয়ে টাকা পয়সা, সোনা-গহনা লুট করে তুলে দেন ফুলবাড়ীতে অবস্থানরত খানসেনাদের হাতে। সকাল ১১টায় সকলকে পুকুর পাড়ে লাইন করে দাড়িয়ে রেখে স্টেনগানের ব্রাশ ফায়ার করে গুলি করে পাখির মতো হত্যা করে। তবে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা রাজাকার কেনান সরকার কে হত্যা করে।