ফুলবাড়ীতে প্রি-পেইড মিটার স্থাপন বন্ধসহ ৮ দাবি গ্রাহকদের


নিজস্ব প্রতিবেদক
দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে বিদ্যুতের প্রি-পেইড মিটার সংযোগ স্থাপন বন্ধ করাসহ ৮দফা দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন স্থানীয় গ্রাহকরা। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২ টায় ফুলবাড়ী সম্মিলিত নাগরিক সমাজের উদ্যোগে পৌর বাজারে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, ফুলবাড়ী সম্মিলিত নাগরিক সমাজের আহ্বায়ক হামিদুল হক।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ফুলবাড়ীতে প্রি-পেইড মিটার এনে বিদ্যুৎ গ্রাহকদের হয়রানি শুরু করেছে নেসকো । বিদ্যুৎ গ্রাহকদের সম্মতি ছাড়াই কারও কারও আবাসিক এবং বানিজ্যিক পোস্ট পেইড মিটার খুলে প্রি-পেইড মিটার সংযোগ দিয়েছে। বিদ্যুৎ গ্রাহকদের এসব পোস্ট পেইড মিটার সচল এবং ত্রুটিহীন ছিল। গ্রাহকদের নিজ টাকায় কেনা এসব পোস্ট পেইড মিটার নেসকো কর্মকর্তা-কর্মচারীরা খুলে নিয়ে গেছে।
এছাড়া কিছু গ্রাহকের অনিচ্ছা সত্ত্বেও নেসকো প্রি-পেইড মিটার সংযোগ দিয়ে মিটার ভাড়া নূন্যতম ৪০ টাকা থেকে ২৫০ টাকা, ডিমান্ড চার্জ ও অন্যান্য চার্জ কেটে নিচ্ছে। যা গ্রাহকের সাথে প্রতারণার শামিল। নেসকো ডিমান্ড চার্জ, ভূতুড়ে চার্জ ইচ্ছামাফিক সফটওয়্যারে যোগ করার জন্য এমন বিতর্কিত প্রি-পেইড মিটার বাজারে এনেছে।
এই প্রি-পেইড মিটার গ্রাহকদের যাচাই কারার জন্য বাজার থেকে অন্য ব্রান্ডের কেনারও কোন সুযোগ রাখে নাই। মিটার ক্রয় এবং বিতরণে সীমাহীন লুটপাট করা হয়েছে। পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ (বিপু) এর এই প্রি-পেইড মিটারের লুটপাট এবং দুর্নীতির খবর দেশবাসী ইতিপূর্বে জেনেছে।
সেই লুটপাট অব্যাহত রাখার জন্য বর্তমানে নেসকো মরিয়া হয়ে উঠেছে। আমরা তাদের এই অপতৎপরতা ঘৃণাভরে প্রত্যাখান করছি। তিনি আরও বলেন, নভেম্বরের মধ্যে ফুলবাড়ীতে প্রি-পেইড মিটার সংযোগ স্থাপন বাতিল ঘোষণা না করলে ফুলবাড়ীবাসীকে নিয়ে আগামীতে কঠোর অন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) দিনাজপুর জেলা কমিটির সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব এবং ফুলবাড়ী উপজেলা শাখার প্রধান সমন্বয়কারী মো. ইমরান চৌধুরী নিশাদ, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট লীগের উপজেলা শাখার সম্পাদক সঞ্জিত প্রসাদ জিতু, হিমেল মণ্ডল, সাবেক কাউন্সিলর আব্দুল জব্বার মাসুদ, ব্যবসায়ী সাখাওয়াত হোসেন, আরমান হোসেন রোমান, মমিনুল ইসলাম, মাহামুদ হাসান, বদরুজ্জামান বাদল, নজরুল ইসলাম, ফারুক আহম্মেদ, শাহিন আলম প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে একইসাথে ৮ দফা দাবি জানানো হয়। দাবি গুলোর মধ্যে রয়েছে; যেসব গ্রাহকদের অসম্মতিতে, জোরপূর্বক এবং অনুপস্থিতিতে প্রি-পেইড মিটারের সংযোগ দেয়া হয়েছে তা পরিবর্তন করে পূর্বের মিটার স্থাপন; নতুন সংযোগে প্রি-পেইড মিটার নিতে গ্রাহকদের বাধ্য না করা; অতিরিক্ত চার্জ বন্ধ এবং পোস্ট পেইড মিটার সচল থাকার পরেও প্রি-পেইড মিটার লাগিয়ে যেসব গ্রাহকদের কাছ থেকে মিটার ভাড়া নেওয়া হয়েছে তা ফেরত দেয়া; হেলে পড়া বৈদ্যুতিক খুঁটি ও ত্রুটিপূর্ণ ঝুলন্ত পুরাতন তার সংস্কার করা; বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হলে কিংবা সংযোগে ত্রুটি হলে তা সমাধানে মই ও ভ্যান ভাড়া বাবদ অর্থ সরকারি রশিদ ছাড়া আদায় বন্ধ করা; এনার্জি রেট/চার্জ ৩০০ ইউনিট পর্যন্ত সর্বনিম্ন এক রেটে অভিন্ন ধাপে বিদ্যুৎ বিল করার দাবি সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
