নিজস্ব প্রতিবেদক
দিনাজপুরের ফুলবাড়ী পৌর শহরের সকলের শ্রদ্ধাভাজন প্রবীণ শিক্ষক আলহাজ্ব প্রফেসর গোলাম মোস্তফা সরকার এর নামাযে জানাজা শেষে দাফন সম্পন্ন হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (৫ আগষ্ট) বিকেল পাঁচটায় (বাদ আসর) সরকারি কলেজ মাঠে মরহুমের জানাযা নামাজ শেষে কানাহার কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন করা হয়। এরআগে গতকাল সোমবার দিবাগত রাত ১০:৫০ মিনিটে ঢাকার শ্যামলী স্পেশালাইজড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
মৃত্যুকালে তার বয়স ছিল বয়স-৮৫ বছর। তিনি ফুলবাড়ী সরকারি কলেজের সাবেক উপাধ্যক্ষ ছিলেন। তিনি দুই ছেলে, চার মেয়ে ও স্ত্রীসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
প্রবীণ এই শিক্ষকের মৃত্যুতে ফুলবাড়ীর বিভিন্ন রাজনৈতিকমহল, সুধিজন, শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও শুভাকাঙ্খীগণ তার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে শোকাহত পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা ও সমবেদনা জানিয়েছেন।
জানাগেছে, প্রফেসর গোলাম মোস্তফা পারিবারিক ও সামাজিক ভাবে একজন সফল ব্যক্তিত্বের অধিকারী। তার জন্মস্থান নবাবগঞ্জ উপজেলার উত্তর শাহবাজপুর গ্রামে। তার বাবা মরহুম ইয়াকিন উদ্দিন সরকার। সহধর্মিণী নাদিরা বেগম। ২ ছেলে, ৪ মেয়ে। সবাই নিজ নিজ অবস্থানে প্রতিষ্ঠিত।
তার বড় ছেলে জাফর সাদিক সোহেল ঢাকায় “ব্লু হরিজন লিডার প্রডাক্ট লি: এর স্বত্বাধীকারী এবং ফুলবাড়ী সমিতি ঢাকা এর সাধারণ সম্পাদক। ছোট ছেলে শিবলী সাদিক ফুলবাড়ীর একজন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও যুবদল নেতা। প্রবীণ এই শিক্ষকের শৈশব কেটেছে গ্রামে। শিক্ষা জীবন শুরু ১৯৪৮ সালে তার পাশের গ্রাম জয়পুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এরপর ভর্তি হন পার্বতীপুর জ্ঞানাংকুর উচ্চ বিদ্যালয়ে। এসএসসি পাশ করেন ১৯৫৮ সালে। বিদ্যালয় জীবনে নওগাঁ জেলার এক সহপাঠীর সঙ্গে সখ্যতা থাকার কারণেই নওগাঁ বিএম কলেজে ভর্তি হন এবং সেখান থেকে এইচএসসি পাশ করেন ১৯৬১ সালে। ১৯৬৬ সালে দর্শন বিষয়ে এমএ পাশ করেন। কর্ম জীবনের শুরুতে ৬ মাস রাজারামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে প্রায় ১ বছর ফুলবাড়ী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরে ১৯৬৯ সালে প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন ফুলবাড়ী ডিগ্রি কলেজে। উল্লেখ্য ১৯৮৯ সালে কলেজ টি সরকারীকরণ হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৯৫ সালে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে বদলি হন নীলফামারী সরকারী ডিগ্রি কলেজে। ১৯৯৯ সালে পদন্নোতি পেয়ে উপধাক্ষ্য হিসেবে আবারও ফুলবাড়ী সরকারী কলেজে যোগদান করেন এবং ২০০০ সালে অবসরে যান।
উল্লেখ্য ২০১১ সালে পবিত্র হজ্ব পালন করেন। ২০১৪ সালে দ্বিতীয়বার স্ব-স্ত্রীক পবিত্র হজ্ব পালন করেন। তিনি ফুলবাড়ী সরকারী কলেজ জামে মসজিদের সভাপতি ছিলেন। বর্তমানে ফুলবাড়ীর উত্তর সুজাপুর (প্রফেসর পাড়া) জামে মসজিদের সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন।