নিজস্ব প্রতিবেদক
দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার হাট-বাজারগুলোতে হঠাৎ করেই বোতলজাত সোয়াবিন তেল উধাও হয়ে গেছে। পক্ষান্তরে খোলা সোয়াবিন তেল কিনতে হচ্ছে চড়া দামে। অভিযোগ উঠেছে খোলা তেলের দাম বেশি হওয়ার কারণে ব্যবসায়ীরা বোতলের তেল খুলে বিক্রি করছেন। এ অবস্থায় নিম্নআয়ের মানুষ চরম বিপাকে পড়েছেন। ক্রেতারা অভিযোগ করছেন, ব্যবসায়ীদের কারসাজির কারণে বাজার থেকে বোতলজাত তেল গায়েব হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজারে খোঁজ করে দেখা যায়, কোনো দোকানেই বোতলজাত সোয়াবিন তেল নেই। ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরবরাহ বন্ধ থাকায় এ সংকট তৈরি হয়েছে। তবে তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, এক লিটার বোতলজাত সোয়াবিন তেলের দাম ১৬৭ টাকা। অথচ খোলা তেল বিক্রি হচ্ছে ১৯০ থেকে ১৯৫ টাকায়, কোথাও কোথাও দাম ২০০ টাকাও ছাড়িয়েছে। ক্রেতার অভিযোগ করছেন খোলা তেলের দাম বেশি হওয়ার কারণে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী বোতলজাত তেল খুলে খোলা তেল হিসেবে বিক্রি করছেন।
রিপন রায় নামের একজন ক্রেতা বলেন, প্রতিদিনের মতো বাজারে গিয়ে বোতল জান সোয়াবিন তেল পাওয়া যায়নি, যেন বাজার থেকে বোতলজাত তেল উধাও। বাধ্য হয়ে বেশি দামে খোলা তেল কিনতে হয়েছে। তিনি আরও বলেন, যদি বাজার সঠিকভাবে মনিটর করা হতো, তাহলে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হতো না।
আরেক ক্রেতা মোশারফ হোসেন অভিযোগের সুরে বলেন, খোলা তেল বেশি দামের কারণে বোতলজাত সোয়াবিন তেল পাওয়া যাচ্ছে না। ব্যবসায়ীরা বোতলজাত তেল খুলে বিক্রি করছে তাই বাজার থেকে বোতলজাত সোয়াবিন গায়েব হয়ে গেছে। তিনি বোতলজান সোয়াবিন না পেয়ে বাধ্য হয়ে খোলা তেল কিনছেন।
একজন ক্রেতা নাম না বলেই বলেন, তেলবাজদের কাজ হলো তেল মজুত করা। কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে তারাই তেলের বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে। যদি এসব অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়, বাজার অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
ফুলবাড়ী পৌর বাজারের মুদি ব্যবসায় সনাতন সরকার জানান, বেশ কিছুদিন থেকে বোতলজাত সোয়াবিন তেলের সরবরাহ কম। একইসাথে খোলা তেলের দাম বাড়লেও বোতলজাত তেলের দাম পূর্বের দামেই ছিল; তাই যে দামে কেনা সেই দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে। আমরা কোম্পানী থেকে সরবরাহ কম পাচ্ছি বলেই বিকল্প হিসেবে খোলা তেল বিক্রি করতে হচ্ছে। তবে বোতলজাত তেল খোলা তেল হিসেবে বিক্রির বিষয়টি অস্বীকার করে অশোক পাল নামের এক মুদি দোকানদার বলেন, বোতলজাত তেলের সরবরাহ কম। আর খোলা তেল সরবরাহ আছে। তাই আমার যেমন পাচ্ছি তেমন বিক্রি করছি।
এদিকে পৌর বাজারের এক ব্যবসায়ী, নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, বাজারের বড় অনেক ব্যবসায়ীর কাছে তেল মজুত আছে। তারা দাম বাড়ার অপেক্ষায় তেল বাজারে ছাড়ছেন না। এমনকি অনেকে পুরনো মাল নতুন দামে বিক্রি করছেন।
ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মির মো. আল আল কামাহ্ তমাল এর বিষয়টি নিয়ে জানান, বিষয়টি আমার জানা ছিলন না। এখন জেনে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বাজার মনিটরিং করা হবে।