রবিবার, ২০শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

বীরগঞ্জের বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে চলছে ইরি-বোরো চাষ

বীরগঞ্জ (দিনাজপুর)প্রতিনিধি
শষ্যভান্ডার হিসাবে খ্যাত দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার কৃষকরা এখন চলতি মৌসুমের ইরি- বোরো ধানের পরিপর্যা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। এ উপজেলার বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠে এখন শুধু বোরা ধান। পুরো মাঠজুড়ে সবুজের সমারোহ। কোন ক্ষেতে চলছে আগাছা পরিষ্কার, কোন ক্ষেতে চলছে সেচ ও সার এবং কীটনাশক স্প্রের কাজ।
সরজমিনে উপজেলার শিবরামপুর, পলাশবাড়ী, শতগ্রাম,পাল্টাপুর, সুজালপুর, নিজপাড়া, মোহাম্মদপুর, ভোগনগর, সাতোর, মোহনপুরসহ কয়েকটি ইউনিয়নে গিয়ে দেখা যায়, কোন কোন এলাকায় আগাম ধানের শীষে উকি দিচ্ছে নতুন ধান। কৃষকরা জানান, প্রথম দিকে প্রচন্ড তাপদাহে সেচ দিয়ে বীজ রোপণ করা হয়। তবে কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে আবাদ ভাল হয়েছে। এখন চিন্তা ঘরে ধান ভালভাবে তোলার। কৃষকরা আরো জানান, এই আবাদে তারা সর্বোচ্চ বিনিয়োগ করেছে। এই ধানের মাঠই তাদের প্রাণ। বোরো মৌসুমে একমন ধান উৎপাদনে খরচ হয় ৮ থেকে ৯শ’ টাকার মতো। গত বছর বোরো ধানের দাম ছিলো ভালোই। এতে লোকসান গুনতে হয়নি। এ হিসাব দিয়ে পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের কৃষক আব্দুল মান্নান বলেন, এখন বাজারে যে ধানের দাম আছে সেটা থাকলেই ভালো।
এবছর বর্গা নিয়ে বলাকা মোড় কালী মন্দির সংলগ্ন এলাকায় ২ একর জমিতে আগম জাতের হাইব্রিড -৮৮ ধান রোপণ করেছি। আশা করছি বিঘা প্রতি ৫০ মণ ধানের। গতবছর আবহাওয়া অনুকূল থাকায় ফলন ভালো হওয়ায় লাভবান হয়েছি। মাঠে এবারও বোরো আবাদ ভাল হয়েছে। রোপণ করা চারা এখন মাঝবয়সী অবস্থায় আছে। যা থেকে ধান পেতে কোন কোন এলাকায় ১৫ দিন, কোন কোন এলাকায় মাস খানেক লাগতে পারে। কৃষক ভালো আবাদের আশায় সর্বোস্ব বিনিয়োগ করেছে বোরো আবাদে। শুধু পৌর এলাকায় নয়, গত কয়েক দিনে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের প্রত্যন্ত গ্রাম অঞ্চলে ঘুরে মাঠে মাঠে বোরো ধানের ফুল দেখা গেছে। সব স্থানেই আবাদ ভালো হয়েছে। কৃষি উপকরণের কোনো ঘাটতি নেই এবার। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকেও চাষিদের এ ব্যাপারে উৎসাহিত করা হয়েছে।
উপজেলার সুজালপুর ইউনিয়নের বোয়ালমারী গ্রামের কৃষক সতীশ চন্দ্র বর্মন জানান, বোরো মৌসুমে এক একর জমিতে চাষাবাদ করছি। আবহাওয়া ভালো থাকলে সুন্দরভাবে ধান ঘরে নেওয়ার আশা করছেন তিনি।
বীরগঞ্জ কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে বীরগঞ্জ উপজেলায় ১৪ হাজার ৯০০ শত’ ৩০ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরোধানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এবারে কৃষকরা উফশী ; টিয়া; ময়না -১২০৩, ১২০৪; ব্রিধান-২৮,২৯, ৬৪; হাইব্রিড-৫ সহ প্রভৃতি জাতের ধান চাষ করেছেন। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, আবহাওয়া অনুকূল থাকায় এবার আবাদ ভাল হওয়ার সম্ভাবনা আছে। তবে ভয়টা শুধু প্রাকৃতিক বিপর্যয় নিয়ে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শরিফুল ইসলাম বলেন,আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবারও বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। কৃষি উপকরণে কোন সংকট সৃষ্টি হয়নি। আমরা কৃষক ভাইদের এবারের শষ্য বিষয়ে নানা পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।

Share This