বীরগঞ্জ (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
দিনাজপুরের বীরগঞ্জে বোম্বাই, মাদ্রাজি, চায়না সহ বিভিন্ন প্রজাতির লিচুর চাষ হয়, যা এ অঞ্চলের কৃষি অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে সাধারণত ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে লিচুর ফুল আসে। তবে ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রায় ফলন নিয়ে উদ্বিগ্ন চাষিরা।
দীর্ঘদিনের চলমান তীব্র খরা ও তাপপ্রবাহে মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছেন দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার লিচু চাষিরা। ফলনে বিপর্যয় দেখা দেওয়ায় বিপাকে পড়েছে লিচু চাষিরা। দিন-রাতের তাপমাত্রা বৃদ্ধি, অসময়ে বৃষ্টি ও খরার কারণে গাছে মুকুল কম এসেছে। অধিকাংশ গাছে নতুন পাতা এসেছে। এতে চাষি ও ব্যবসায়ীরা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, অতিরিক্ত গরমে গাছে থাকা লিচুর গুটি ঝরে পড়ছে। এতে হতাশ চাষিরা।
উপজেলার শিবরামপুর, পলাশবাড়ী, শতগ্রাম, পাল্টাপুর, সুজালপুর, নিজপাড়া, মোহাম্মদপুর, ভোগনগর, সাতোর, মোহনপুর ও মরিচা ইউনিয়নের প্রত্যান্ত গ্রামাঞ্চলে এবার লিচুর ভালো ফলন হয়নি।
তীব্র গরমের কারণে লিচু লাল হয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাগান মালিকরা। একই সঙ্গে তারা জানিয়েছেন, কৃষি কর্মকর্তারা কখনোই বাগানে এসে তাদের সহযোগিতা করেন নি।
উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, তীব্র গরমের কারণে শুরুতে এমনটি হয়েছে। তবে বৃষ্টি হলে সব ঠিক হয়ে যাবে। স্বাদে ও গুণে অনন্য হওয়ায় সারাদেশে কিন্তু অনেকটাই পরিচিত এ উপজেলার লিচু। চলতি মৌসুমে টানা অনাবৃষ্টি আর তীব্র তাপপ্রবাহে লিচুর আকৃতি বাড়ছে না। এ জন্য লিচুর একাংশ শুকিয়ে ঝরে পড়ছে। গাছের গোড়ায় কীটনাশক, সেচ, গাছে স্প্রে করেও প্রতিকার মিলছে না। এ অবস্থায় আর্থিকভাবে ক্ষতির আশংকা করছেন লিচুচাষি ও বাগান মালিকরা। পাশাপাশি উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়ারও ধারনা করছে কৃষি বিভাগ।
বীরগঞ্জ কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলিত মৌসুমে উপজেলায় ৪২০ হেক্টর জমিতে লিচু উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। গত বছর ২৫৬৭ মেট্রিক টন লিচু উৎপাদন হয়েছে। এবারও অনুরূপ সম্ভাবনা রয়েছে।
উপজেলার ঝাড়বাড়ি জাম তলী এলাকার লিচু চাষি ফারুক হোসেন বলেন, নতুন চাষি হিসেবে ১৫-১৬টি বাগানে এবার প্রায় ১ হাজার লিচু গাছ রয়েছে। শুরুর দিকে 'লিচুর মুকুল দেখে বাম্পার ফলনের স্বপ্ন দেখেছিলাম। প্রচণ্ড তাপ প্রবাহের কারণে প্রায় ৩ হাজার গাছের লিচুর গুটি ফিকে হয়ে ঝরে গেছে। তবে চলমান আবহাওয়া অনুকূল থাকলে ক্ষতি পুষিয়ে দিতে পারবো। তিনি আরও বলেন, আমার ৭০০ গাছে মোটামুটি লিচু আছে, উৎপাদিত লিচু ঢাকা এবং দিনাজপুর আড়তে পাঠিয়ে থাকি। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে বাম্পার ফলন হওয়ার আশাবাদী।