মঙ্গলবার, ১৫ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

বীরগঞ্জে লিচু ফুলের মধু সংগ্রহে ব্যস্ত মৌচাষিরা

বীরগঞ্জ (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
দিনাজপুরের বীরগঞ্জে মুকুলে মুকুলে ছেঁয়ে গেছে লিচু গাছ। আর মুকুলের ঘ্রাণে প্রতিটি গাছ এখন মৌমাছির গুঞ্জণে মুখরিত হয়ে উঠেছে বাগানগুলো। আর এটাকে কাজে লাগিয়ে মধু আহরণে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৌয়ালরা। লিচু ফুলের মধু আহরণের ধুম পড়েছে বাগানগুলোতে।

উপজেলার নিজপাড়া, পাল্টাপুরসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের প্রত্যান্ত গ্রামাঞ্চলে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মধু সংগ্রহ করতে প্রায় ২৫ থেকে ২৫ মৌয়াল এসেছেন বিভিন্ন লিচু বাগানে। সারিবদ্ধ বাগানের নিচে মৌমাছির বাক্স বসিয়ে মধু সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৌয়ালরা।

বীরগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, প্রতিবছরের মতো এবারও বাগানের লিচু গাছে ফুল আসার সঙ্গে সঙ্গেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মৌয়ালরা এসেছেন মধু সংগ্রহ করতে। এ বছর পাল্টাপুর ইউনিয়ন বিভিন্ন লিচু বাগান থেকে প্রায় হাজার টন মধু সংগ্রহ করা হবে। সরেজমিনে বীরগঞ্জ উপজেলার নিজপাড়া ইউনিয়ের শম্ভুগাঁও, পাল্টাপুর ইউনিয়নের সনকা, মরিচা ইউনিয়নের গোপালগঞ্জ বিভিন্ন লিচু বাগান ঘুরে দেখা যায় মধু সংগ্রহের চিত্র। বিভিন্ন বাগানে লিচু গাছের নিচে গোলাকার সারিবদ্ধ বাক্স বসিয়ে রেখেছেন মৌয়ালরা। সিরাজগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা খামারিরা প্রায় ২ থেকে ৩ শত মৌবক্স স্থাপন করেছেন। আবহাওয়া ভালো থাকলে গড়ে প্রতি বাক্স থেকে ১০/২২ কেজি লিচু মধু উৎপাদন সম্ভব।

নিজপাড়া ইউনিয়নের শম্ভুগাঁও গ্রামের বাগন মালিক ইউসুফ আলী জানান, গতবারের তুলনায় এবছর আবহাওয়া অনুকূল থাকায় মধু সংগ্রহ ভালো হয়েছে। এই এলাকার মধুর গুনগতমান এবং চাহিদা ভালো হওয়ায় দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে খামারিরা মৌবক্স স্থান করে লাভবান হচ্ছে। বীরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. শরিফুল ইসলাম জানান, উপজেলার পাল্টাপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় মোজা জাফর, আকবর ও পরিতোষ মাস্টারসহ ওই এলাকার ১০টি লিচু বাগানে ১৫ জন মৌচাষি ৩ হাজার ২শত ৪৫টি মৌবক্স স্থাপন করে ২৯ হাজার ৯ শত ১৫ কেজি মধু সংগ্রহ করেছে। প্রতি কেজি মধুর বর্তমান বাজার দর ৪শত থেকে ৫ শত টাকায় বিক্রি হয়েছে। বীরগঞ্জে মাটিতে বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে বিদেশি ফল মালবেরি মধু চাষে আগ্রহ বাড়ছে।

মৌচাষি দেলোয়ার হোসেন বলেন, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সিজনালি মধু সংগ্রহ করে থাকি। এবার আ‌মি বীরগঞ্জ উপজেলার পাল্টাপুর এলাকায় একটি লিচু বাগানে ৩০০ বাক্স নিয়ে মধু সংগ্রহ করতে এসেছি। আ‌মি প্রতি সাতদিন পর পর মধু সংগ্রহ করতে পা‌রি। এ উপজেলায় যে পরিমাণ লিচু বাগান আছে, এটা যদি সুশৃংখল অবস্থায় গাণিতিক আকারে পরিচালনা এবং মৌখামারিদের সেভাবে বিন্যস্ত’ করা যায় তাহলে কয়েক হাজার থেকে লাখো টাকার মধু আহরণের সম্ভাবতা রয়েছে। এজন্য দিনাজপুরে একটি মৌ-গবেষণা স্থাপনেরও দাবি জানান। তিনি আরও বলেন, য‌দি আবহাওয়ার অবস্থা ভালো থাকে তাহলে আ‌মি আশা ক‌রি ২৫০ মন মধু সংগ্রহ করতে পারব।

Share This