শনিবার, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

ভিনগ্রহের প্রাণের অস্তিত্ব, শক্তিশালী প্রমাণ পেলেন বিজ্ঞানীরা

দেশ মা ডেস্ক

ভিনগ্রহে প্রাণ থাকতে পারে—এই প্রশ্ন বহুদিন ধরেই মানুষের কৌতূহলের কেন্দ্রবিন্দুতে। এবার সেই প্রশ্নের জবাবে নতুন আশার আলো দেখিয়েছেন কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল বিজ্ঞানী। তাদের দাবি, পৃথিবী থেকে বহু দূরের এক গ্রহের বায়ুমণ্ডলে এমন গ্যাসের সন্ধান মিলেছে, যা পৃথিবীতে কেবল প্রাণীরাই তৈরি করে। ভিনগ্রহের প্রাণের অস্তিত্ব থাকার সবচেয়ে শক্তিশালী প্রমাণ পাওয়ার দাবি করেছেন তারা। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা যায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, গ্রহটির নাম কেটু-এইটিনবি। এটি পৃথিবীর চেয়ে প্রায় আড়াই গুণ বড় এবং এর অবস্থান পৃথিবী থেকে প্রায় ৭০০ ট্রিলিয়ন মাইল দূরে। গ্রহটি একটি লাল বামন নক্ষত্রকে ঘিরে আবর্তিত হয়। এই গবেষণায় বিজ্ঞানীরা ব্যবহার করেছেন নাসার জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ, যা বর্তমানে মহাকাশ গবেষণায় সবচেয়ে শক্তিশালী টেলিস্কোপ হিসেবে বিবেচিত।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, গ্রহটির বায়ুমণ্ডলে পাওয়া গেছে ডাইমিথাইল সালফাইড ও ডাইমিথাইল ডিসালফাইড নামের দুটি গ্যাসের চিহ্ন। এই গ্যাসগুলো পৃথিবীতে সাধারণত তৈরি হয় সামুদ্রিক ফাইটোপ্ল্যাঙ্কটন ও ব্যাকটেরিয়া দ্বারা—অর্থাৎ প্রাণ ছাড়া এই গ্যাসগুলোর সৃষ্টি হয় না।

গবেষণার প্রধান অধ্যাপক নিকু মাধুসূদন বলেন, এই গ্যাসের উপস্থিতি যদি সত্যিই জীবনের ইঙ্গিত হয়ে থাকে, তাহলে ধরে নিতে পারি কেটু-এইটিনবি গ্রহটি প্রাণে ভরপুর। তিনি বলেন, ‘আমরা আশাবাদী, আগামী এক থেকে দুই বছরের মধ্যেই এই গ্যাসের উপস্থিতি এবং এর উৎস সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারবো। এটি এখন পর্যন্ত প্রাণের সম্ভাবনার সবচেয়ে জোরালো প্রমাণ।’

এই আবিষ্কার সত্য হলে, মহাবিশ্বে প্রাণের অস্তিত্ব যে কেবল কল্পনা নয়, বাস্তবেও সম্ভব—সেই তত্ত্ব আরও জোরালো হবে। অধ্যাপক মাধুসূদনের মতে, ‘গ্রহটিতে যদি প্রাণের অস্তিত্ব প্রমাণিত হয়, তাহলে ধরে নিতে পারি আমাদের গ্যালাক্সি প্রাণে ভরপুর।’

বিজ্ঞানীরা অবশ্য বলছেন, এই আবিষ্কার এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। আরও পর্যবেক্ষণ ও তথ্য বিশ্লেষণ দরকার, যেন নিশ্চিতভাবে বলা যায় এই গ্যাসগুলো প্রাণ থেকেই সৃষ্টি হয়েছে।

Share This

COMMENTS