হিলি প্রতিনিধি
বাংলাদেশে রপ্তানিতে (আলুবাহী ট্রাক) আলুবাহী ট্রাকের স্লট বুকিং বন্ধ করে দিয়েছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ সরকার। ফলে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে দুই-এক দিনের মধ্যে বাংলাদেশে আলু আমদানি বন্ধ হয়ে যেতে পারে! আলুর দাম বৃদ্ধির অজুহাত দেখিয়ে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ায় দুই দেশের আলু ব্যবসায়ীরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ভারতের হিলি স্থলবন্দরের এক্সপোর্টার পাপ্পু আগরয়াল ও বাবই দে জানান, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরকে না জানিয়ে সেখান থেকে অন্য রাজ্যে এবং বাংলাদেশে আলু রপ্তানি করা হচ্ছিল। ফলে সেখানে আলু সহ পেঁয়াজের দাম হু হু করে বাড়ছে। এমন অভিযোগ তুলে ধরে গত বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে আলু রপ্তানি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সেই বার্তার পরই গত শুক্রবার (২২ নভেম্বর) নবান্নে বৈঠকে বসে টাস্কফোর্স কমিটি। মুখ্য সচিবের সঙ্গে টাস্কফোর্সের এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। আর তাতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় মুখ্যমন্ত্রীর পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত ভিন রাজ্য সহ বাংলাদেশে আপাতত আলু রপ্তানি বন্ধ থাকবে।
তারা আরও জানান, হিলি স্থলবন্দর ছাড়াও আরও ৪টি স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশে যেকোন পণ্য রপ্তানি করার ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পরিবহন দপ্তর থেকে পণ্যবাহী ট্রাকের জন্য অনলাইনে স্লট বুকিং দিয়ে সিরিয়াল নিতে হয়। সে অনুযায়ী রপ্তানিকৃত পণ্যবাহী ট্রাক বাংলাদেশে প্রবেশ করে। কিন্তু আজ রোববার (২৪ নভেম্বর) সকাল থেকে পশ্চিমবঙ্গ সরকার রপ্তানিকৃত আলুবাহী ট্রাকের স্লট বুকিং বন্ধ করে দিয়েছে। কোন ভাবেই অনলাইনে স্লট বুকিং দেওয়া যাচ্ছে না। তাতে মনে হচ্ছে বাংলাদেশে আলু রপ্তানি আর নাও হতে পারে।
এদিকে হিলি স্থলবন্দরের আলু আমদানিকারক শহীদুল ইসলাম জানান, ভারতের ব্যবসায়ীরা আমাদের জানিয়েছে আলুর ট্রাকের স্লট বুকিং করা যাচ্ছে না। হয়ত কাল সোমবার বা কাল মঙ্গলবার থেকে বাংলাদেশে আলু আমদানি বন্ধ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে আজ রোববার সকাল থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পূর্বের এলসির আলু রপ্তানি স্বাভাবিক রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আজ রোববার বিকাল ৪টায় এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ভারত থেকে ৪০টি আলু বোঝাই ট্রাকে ১ হাজার মেট্রিকটন আলু দেশে আমদানি করা হয়েছে।
হিলি স্থল শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা শফিউল আলম জানান, বাংলাদেশ সরকার দেশের বাজারে সরবরাহ স্বাভাবিক ও দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে আলু আমদানির ওপর থেকে শুল্ক কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়। এই অবস্থায় গত ৫ সেপ্টেম্বর এক প্রজ্ঞাপনে ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ নির্ধারণ করে। একইসঙ্গে ৩ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ শুল্কও প্রত্যাহার করে নেয়। এরপর গত ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে আলু আমদানি করা হচ্ছে। আজও আলু আমদানি হয়েছে।