হিলি স্থলবন্দরের নানা সমস্যা নিয়ে সিঅ্যান্ডএফের সংবাদ সম্মেলন

হিলি প্রতিনিধি
দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম দিনাজপুরের হিলি বন্দর দিয়ে সম্প্রতি সময়ে আমদানি-রপ্তানি কমে যাওয়াসহ বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে বাংলাহিলি সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন। আজ সোমবার দুপুর ১২ টায় বাংলাহিলি সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের নিজস্ব কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে হিলি স্থলবন্দরের আমদানি বাণিজ্য কমে যাওয়ার কারণগুলো ব্যাখ্যা করেন, সংগঠনটির সভাপতি মো. ফেরদৌস রহমান।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, হিলি স্থলবন্দর দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্থলবন্দর। বে-সরকারি অপারেটর হিলি পানামা পোর্ট লিংক লিমিটেডের হয়রানি ও শুল্ক স্টেশন এর বৈষম্যের কারণে গুরুত্বপূর্ণ এই বন্দর দিয়ে সম্প্রতি আমদানি বাণিজ্য কমে এসেছে। আগে যেখানে প্রতিদিন গড়ে ৩০০-৪০০ গাড়ি প্রবেশ করত সেখানে বর্তমানে গাড়ির সংখ্যা দাড়িয়েছে ১৭-২০ এর ঘরে। যা অত্যন্ত দুঃখ জনক বিষয়! তাই সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে ও হিলি স্থলবন্দরের আমদানি বাণিজ্য ফিরিয়ে আনতে আজকের এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।
এ সময় তিনি অভিযোগ করে বলেন, হিলি কাস্টমস কর্তৃক এইসএস কোর্ড একেক সময় একেক রকম নির্ধারণ করার কারণে ব্যবসায়ীদের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। হিলি পানামা পোর্টের অভ্যন্তরের দুটি পণ্য মাপার স্কেল নষ্ট থাকার কারণে পণ্যের ওজনের ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। হিলি পানামা পোর্টের চেয়ারম্যান সরকারের সাথে চুক্তিবদ্ধ আছে তিনি হিলি বন্দর দিয়ে আমদানিকারক হিসেবে ভারত থেকে পণ্য আমদানি করতে পারবেন না। তারপরও তিনি এসব কিছু তোয়াক্কা না করে ইতিপূর্বে নিজে পাথর আমদানি করেছেন। এছাড়াও বন্দরের শ্রমিকদের সেকশনটা বে-নামে সরকারের কাছ থেকে ডেকে নেন পানামা পোর্টের চেয়ারম্যান। বন্দরের আমদানিকারকদের কাছ থেকে পোর্টের অভ্যন্তরীন শ্রমিকদের জন্য মজুরি নেওয়া হলেও তাদের ন্যায্য মূল্য দেয়া হচ্ছে না। ফলে ভারত থেকে বন্দরে প্রবেশ করা গাড়িগুলো সময় মতো লোড আনলোড না হওয়ায় ব্যবসায়ীদের অতিরিক্ত নাইট চার্জ গুনতে হচ্ছে বলেও অভিযোগ তুলে ধরা হয় সংবাদ সম্মেলনে।
হিলি সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশন এর সাধারণ সম্পাদক মো. শাহিনুর ইসলাম শাহিন বলেন, আমি নিজে এই বন্দর দিয়ে ভারত থেকে জিরা আমদানি করি। হিলি পানামা পোর্ট অভ্যন্তরে মানসম্মত শেড না থাকার কারণে নাইট চার্জ দিয়েও আমাদের পণ্যগুলো অরক্ষিত অবস্থায় পরে থাকে এবং শ্রমিকদের ন্যায্যমূল্য না দেওয়ার কারণে আমদানিকৃত গাড়ি সময় মতো লোড আনলোড না হওয়ায় ব্যবসায়ীদের ক্ষতির মুখে পড়তে হয়। বন্দরের শ্রমিকরা আমাদের কাছে বারংবার অভিযোগ করেছে যে তাদের ন্যায্যমূল্য দেওয়া হচ্ছে না। আমরা এসব বিষয়ে নৌ মন্ত্রণালয় থেকে শুরু করে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেও কোন সুফল পাইনি। তাই সামাজিক দায়বদ্ধতা ও হিলি স্থলবন্দরকে বাঁচাতে আজকের এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
অন্য দিকে হিলি পানামা পোর্ট অভ্যন্তরে শ্রমিকদের ন্যায্যমূল্য দেওয়া হচ্ছে না বিষয়ে জানতে চাইলে কোন শ্রমিক গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে কথা বলতে রাজি হয় নাই। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বন্দরের শ্রমিক নেতা বলেন, পানামা পোর্ট অভ্যন্তরে শ্রমিকদের ন্যায্যমূল্য দেওয়া হয় না এটা দীর্ঘ দিনের সমস্যা। কিন্তু আমি নিজেও কিছু বলতে পারবো না। আমার লাইফ গ্যারান্টি কে দিবে। গত দুই বছর আগে পানামা পোর্টের চেয়ারম্যান শ্রমিকদের সেকশন ৭৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা দিয়ে নিজে ডেকে নিয়েছেন কিন্তু বে-নামে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
এসময় অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি মশফিকুর রহমান, সিএম মানিক মিয়াসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।