খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
দিনাজপুরের খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দীর্ঘ ১১ মাস ধরে জলাতঙ্ক রোগ প্রতিরোধে ব্যবহৃত র্যাবিস ভ্যাকসিনের চরম সংকট চলছে। এতে কুকুর, বিড়াল, শিয়াল কিংবা বন্য প্রাণীর কামড়ে আহত রোগীরা পড়েছেন চরম দুর্ভোগে। বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয়ে বাইরের ফার্মেসি থেকে ভ্যাকসিন কিনতে হচ্ছে, যা সবসময় সহজলভ্য নয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ১৪ জুলাই পর্যন্ত কুকুর বা অন্যান্য প্রাণীর কামড়ে আহত হয়ে হাসপাতালে সেবা নিতে এসেছেন ১০২ জন। গত বছর এই সংখ্যা ছিল ১৫৬-এর বেশি। এত রোগী সত্ত্বেও ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে র্যাবিস ভ্যাকসিন সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। ফলে আক্রান্তদের বাইরে থেকে ভ্যাকসিন ও ওষুধ কিনতে হচ্ছে।
নলবাড়ী গ্রামের ভুক্তভোগী সামসুল আলম বলেন, “ছেলেকে কুকুরে কামড় দেওয়ার পর হাসপাতালে নিয়ে গেলে জানানো হয় জলাতঙ্ক ভ্যাকসিন নেই, বাইরে থেকে কিনে আনতে হবে। কিন্তু বাইরে থেকেও অনেক সময় ভ্যাকসিন পাওয়া যায় না। এতে বাড়তি টাকাও গুনতে হয়, আর দুশ্চিন্তায় থাকি।”
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শফিকুল ইসলাম বলেন, “আমরা একাধিকবার ভ্যাকসিনের চাহিদা পাঠিয়েছি। কিন্তু এখনো কোনো ভ্যাকসিন সরবরাহ পাইনি।”
খানসামা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামরুজ্জামান সরকার বলেন, “বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দ্রুত সমস্যার সমাধান করা হবে। সাময়িক এ সংকট মেটাতে প্রয়োজনে উপজেলা পরিষদ থেকে সহযোগিতা করা যায় কিনা, তা বিবেচনা করা হচ্ছে। আগামি উপজেলা পরিষদের সভায় বিষয়টি গুরুত্বসহকারে আলোচনা করা হবে।”
স্থানীয়দের অভিযোগ, জলাতঙ্ক রোগ প্রাণঘাতী হওয়ায় এ টিকার দীর্ঘদিনের সংকট কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। অবিলম্বে টিকা সরবরাহ করে জনস্বাস্থ্য রক্ষায় কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানান তারা।