সোমবার, ১৮ই আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

বড়পুকুরিয়া খনির কর্মচারীদের আন্দোলন ৬ আগস্ট পর্যন্ত স্থগিত

নিজস্ব প্রতিবেদক
দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির ২৭৬ জন কর্মচারীর মধ্যে ৮৭ জন কর্মচারী দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর তাদের চাকুরী স্থায়ীকরণের রায় পেলেও কর্তৃপক্ষের উদাসিনতায় চাকরী স্থায়ী না করার অভিযোগ তোলেন কর্মচারীরা। তারা গত ১৬ জুলাই বিভিন্ন দপ্তরে চিঠি দিয়ে ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে দাবি আদায় না হলে কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারী দেন। বিষয়টি নিয়ে গত ২১ জুলাই “বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে ১৫ বছরেও বৈষম্যের অবসান নেই; কর্মচারীরা বঞ্চিত, কর্মকর্তাদের নিয়োগ অব্যাহত!” শিরোনামে স্থানীয় দৈনিক দেশ মা পত্রিকায় প্রথম পৃষ্ঠায় প্রধান শিরোনামে এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
এ নিয়ে খনি কর্তৃপক্ষ আগামী ৬ আগস্ট ঢাকায় কর্মচারী প্রতিনিধিদের সাথে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পর্কিত আলোচনার প্রস্তাব দেয়ায় কঠোর আন্দোলনের আল্টিমেটাম ৬ আগস্ট পর্যন্ত স্থগিত করেছেন কর্মচারীরা।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) বিকেলে প্রেসব্রিফিং এর মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কয়লাখনির সুবিধা বঞ্চিত অস্থায়ী কর্মচারীরা। তাদের পক্ষে তাজমুল ইসলাম নামের একজন খনি কর্মচারী এ বিষয়ে প্রেসব্রিফিং করেন।
এসময় কর্মচারী তাজমুল ইসলাম জানান, আমরা বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ৮৭ জন কর্মচারী দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে স্থায়ী নিয়োগে বঞ্চিত হয়ে আসছি। চুক্তি অনুযায়ী ২০১০ সালে আমাদের চাকরী স্থায়ী হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু খনি কর্তৃপক্ষের উদাসিনতায় দীর্ঘ দিনেও আমাদের স্থায়ী নিয়োগ সম্পন্ন হয়নি। স্থায়ী নিয়োগ না হওয়ায় আমরা বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত। বাধ্য হয়ে ২০১৮সালে উচ্চ আদালতে রিট দায়ের করি। আদালত তিন মাসের মধে আমাদেরকে স্থায়ী নিয়োগ দিতে নির্দেশনা দেয়। পরবর্তীতে আপিল বিভাগ, রিভিউ সব উচ্চ আদালতের আদেশ বহাল রাখে। এরপর খনি কর্তৃপক্ষ আইনি মতামত চেয়ে পেট্রোবাংলা, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ, আইন ও বিচার বিভাগকে চিঠি দিলে তারাও আদালতের রায় বাস্তবায়ন করা যেতে পারে বলে মতামত দেন। এর পরও খনি কর্তৃপক্ষ স্থায়ী নিয়োগ না দিলে আমরা বিভিন্ন দপ্তরে চিঠি দিয়ে অবগত করি এবং ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে স্থায়ী নিয়োগ না দিলে আন্দোলনের আল্টিমেটাম দেই।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) খনি কর্তৃপক্ষ আমাদেরকে আন্দোলন থেকে বিরত থেকে আগামী ৬ আগস্ট ঢাকায় উভয় পক্ষের আইনজীবীদের সাথে আলোচনার মাধ্যমে নিয়োগ প্রক্রিয়া সমপন্ন করার প্রস্তাব দেয়। আমরা কর্মচারীরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা শেষে তাদের প্রস্তাব গ্রহণ করছি।
তাই আমাদের দেয়া কঠোর আন্দোলনের আল্টিমেটাম আগামী ৬ আগস্ট পর্যন্ত স্থগিত করছি। তবে কোন কারনে ৬ তারিখের আলোচনা ফলপ্রসু না হলে কিংবা সময় ক্ষেপণের কৌশল মনে হলে ওই তারিখের পর নতুন করে আন্দোলন ঘোষণা করা হবে।
এ ব্যাপারে কথা বললে খনির মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মোহাম্মদ ছানা উল্লাহ জানান, খনির কর্মচারীরা বিভিন্ন দপ্তরে চিঠি দিয়েছিল। এরই প্রেক্ষিতে আগামী ৬ আগস্ট ঢাকা লিয়াজোঁ অফিসে তাদের আইনজীবী ও আমাদের আইনজীবীসহ বসে আইনি প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করা হবে। কোন পদ্ধতিতে নিয়োগ হবে তা আদালতের মাধ্যমে সম্পন্ন করা হবে।

Share This