বীরগঞ্জে ছেড়া পলিথিনের নিচেই রাত কাটে ছকিনার

বীরগঞ্জ (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার ভোগনগর ইউনিয়নে ১নং ওয়ার্ডের গোপালপুর গ্রামের এক প্রান্তে, জরাজীর্ণ একটি বসতবাড়িতে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন ছকিনা বেগম। বসবাসের মতো ঘর নেই, মাথার উপর নেই কোনো নিরাপদ ছাউনি। পুরোনো কাঠ ও টিনের খণ্ডে জোড়া দেওয়া একটি ঘরে কোন রকমে বসবাস করেন তিনি। অনেক জায়গায় ভেঙে পড়া টিন ও ছেড়া পলিথিনের কারনে বৃষ্টির দিনে সেই ঘরেও থাকার উপায় নেই। বাধ্য হয়ে পলিথিনের ছাউনির নিচেই নির্ঘুম রাত কাটে ছকিনার।
সরেজমিনে ছকিনার বাড়িতে গিয়ে জরাজীর্ণ এমন ঘর দেখা যায়। ঘর গুলো অনেক আগের টিনের তৈরি হলেও টিন গুলো মরিচা ধরে নষ্ট হয়ে গেছে। ছাউনি অবস্থা এতটাই খারাপ যে কোন কোন জায়গায় পুরো টিনই ভেঙে পড়েছে। অভাবের সংসারে টিকে থাকতে চেষ্টার ত্রুটি করেননি ছকিনা বেগম। ভাঙ্গা টিন বেয়ে রোদ বৃষ্টি ঠেকাতে লাগিয়েছেন পলিথিন। নিষ্ঠুর আবহাওয়া সেই পলিথিনকেও করেছে টুকরো টুকরো। দিনের একটি বড় অংশ নষ্ট হয় পলিথিন ঠিক করতে কিন্তু তাতেও কাজ হয়না।
ছকিনা বেগম বলেন, আমার স্বামী ১৮ বছর আগে মারা গেছে। পাশে কেউ নেই, রাতে ঘুমাতে খুব কষ্ট হয়। আমাকে এভাবে জীবন যাপন করতে হয়। সারাদিন একবার রান্না করি মানুষের কাজ করে খাবার জোগাই।
ছকিনার প্রিয়জনের মধ্যে আছে এক মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলে মো. সৈয়দ আলী ও মা ছাড়া এক নাতি মো. আরমান আলী ।
দারিদ্র্যতার করাল গ্রাসে পড়ে ছকিনার পরিবারের জীবন একপ্রকার থমকে গেছে। কোনো সরকারি সহায়তা না পেয়ে দিনের পর দিন মানবেতর জীবন যাপন করছেন তিনি।
প্রতিবেশীরা জানান, “বছরের পর বছর ধরে ছকিনা এই দুরবস্থায় আছেন। সরকারি কোনো নজর এখনো পড়েনি তার ওপর।”
এখন স্থানীয়দের দাবি, ছকিনার মতো অসহায় মানুষদের জন্য দ্রুত প্রয়োজনীয় সহায়তা ও একটি নিরাপদ বাসস্থানের খুব জুরুরি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।
বীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভির আহমেদ জানান, ছকিনা বেগমের দুরবস্থার কথা শুনে তারা বাসায় গিয়ে সার্বিক খোঁজখবর নিয়েছি। তাকে কিছু শুকনো খাবার দিয়ে এসেছি। তার কষ্ট লাঘবে মানবিক সহায়তা করা হবে।