বুধবার, ১০ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

পাঁচবিবিতে রাস্তা খুঁড়ে ঠিকাদার উধাও, দুর্ভোগে এলাকাবাসী

জয়পুরহাট সংবাদদাতা
জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের বেড়াখাই, নন্দীগ্রাম, নিকড়দিঘী হয়ে আওলাই ইউনিয়নের ধাপেরহাট পাগলাবাজার থেকে দরগাবাজার পর্যন্ত ৮.৪৫০ কি.মি. রাস্তা প্রশস্ত করণ ও সংস্কারের কাজ শেষ না করেই পালিয়ে গেছে ঠিকাদার। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের বক্তব্য বর্ষার কারনে কাজ বন্ধ। তবে কাজের শুরুতেই রাস্তার প্রশস্ত করণের জন্য ৮ কিলোমিটার রাস্তার দু’ধার মাটি কেটে গর্ত করে তা ভরাট না করেই ঠিকাদার পালিয়ে যাওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে পথচারী ও এলাকার জনগন। রাস্তাটি দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত ঘটছে বিভিন্ন ধরণের দুর্ঘটনা। ফলে দ্রুত কাজ শেষ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
জানা যায, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীন রুরাল কানেকটিভিটি ইমপ্রভমেন্ট প্রজেক্ট (আরসিআইপিএএফ-২) এর আওতায় গত ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে বেড়াখাই এর তেলিপুকুর থেকে ধাপেরহাট ,দরগা বাজার হয়ে কামদিয়া সীমানা পর্যন্ত ৮.৪৫০ কি.মি. রাস্তা প্রশস্ত করণের জন্য বার্ষিক উন্নয়ন প্রকল্প (এডিপি) ও সরকারী নিজস্ব অথায়র্নে (জিওবি) প্রায় ১১ কোটি টাকার টেন্ডার হয়। কাজটি পায় নওগাঁ জেলার জুয়েল ইলেকট্রনিক ও মোজাফফর বিপণী বিতান নামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ।
কাজ পেয়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সেই লক্ষ্যে ২০২৪ সালের ৭ এপ্রিল রাস্তা প্রশস্ত করণের জন্য পাকা রাস্তার দুপাশে গর্ত করে। তবে কাজ শুরুর অল্প কিছুদিন পরেই ঠিকাদারের লোকজন তাদের মালামাল নিয়ে রাতের আঁধারে পালিয়ে যায়। এর ফলে রাস্তার দু’পাশ খোঁড়া থাকায় বৃষ্টিতে খানা খন্দ, কাদা আর শুকনায় ধুলোতে পথচারী ও এলাকাবাসী চরম দুর্ভোগ দুর্দশার মধ্যে চলাচল করতে থাকে। এ অবস্থায় গত মাসের ১৮ তারিখে কাজের নির্ধারিত মেয়াদও শেষ হয়ে যায়।
সরেজমিনে দেখা যায়, বেড়াখাই থেকে দরগা বাজার পর্যন্ত পুরা রাস্তার দু’পাশে খোঁড়া গর্তের কিছু অংশে খোয়া দিয়ে আংশিক ভরাট করা হয়েছে। তবে বেশির ভাগ অংশ দু’ধার খোঁড়া এবং তার উপর ঘাসে ঢেকে থাকায় ঝুঁকি নিয়ে যান চলাচল করছে। রাস্তায় দুটি ভ্যান পাশাপাশি পার হতে পারে না। রাতের বেলা গর্তে পড়ে মোটরসাইকেল আরোহীরা প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার স্বীকার হচ্ছে। রিক্সা ভ্যান গর্তে পড়ে প্রায়ই উল্টে যায়। এমনিতেই গ্রামীণ রাস্তা গুলো সরু তার উপর উভয় পাশে গর্ত খুঁড়ে রাখায় দিনের পর দিন এ দুর্ভোগ আরো বাড়ছে। এ অবস্থায় যে কোন সময় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে এলাকাবাসী আশংকা করছেন ।
ভ্যান চালক আজিজার রহমান বলেন, দু’ধারে খাল থাকায় আমরা এই রাস্তা দিয়ে যাত্রী নিয়ে যেতে পারি না। সাইকেল বা মোটরসাইকেলকে সাইট দিতে গিয়ে গর্তে পড়ে যেতে হয়।
নন্দীগ্রাম বাজারের ব্যবসায়ী আবু রায়হান বলেন, রাস্তার কাজ শেষ না করেই ঠিকাদারের লোকজন পালিয়ে যাওয়ার কারণে বিপাকে পড়তে হয়েছে ব্যবসায়ীদের। রাস্তা খুঁড়ে রাখার কারণে কোন যানবাহন ঢুকতে পারে না। ফলে ধান চাল পরিবহনে দুর্ভোগ পোহাতে হয় আমাদের।
এব্যাপারে ঠিকাদারের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
উপজেলা প্রকৌশলী মো. মোবারক হোসেন বলেন, বর্ষা মৌসুমে কাজ করলে কাজের গুণগত মানের সমস্যা থেকে যায়। বর্ষা শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুরোদমে এই রাস্তার কাজ শুরু হবে বলেও জানান।

Share This