খানসামায় বিষমুক্ত সবজি চাষে সফল নুরুল ইসলাম

খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় বিষমুক্ত সবজি চাষে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছেন আলোকঝাড়ী ইউনিয়নের জাহাঙ্গীরপুর গ্রামের উদ্যোগী কৃষক নুরুল ইসলাম। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আওতায় ‘পার্টনার’ প্রকল্পের প্রশিক্ষণ ও সহায়তায় তিনি জৈব পদ্ধতিতে চিচিঙ্গা চাষ করে লাভবান হয়েছেন।
সবজি উৎপাদনে খানসামা একটি সমৃদ্ধ উপজেলা। এখানে করলা, পটল, চিচিঙ্গা, লাউ, ঝিঙ্গা, চালকুমড়াসহ প্রায় ২ হাজার ৬২৫ হেক্টর জমিতে নানা রকম সবজি আবাদ হয়ে থাকে। কৃষকদের উন্নত প্রশিক্ষণ ও টেকসই চাষ পদ্ধতি নিশ্চিত করতে ‘প্রোগ্রাম অন এগ্রিকালচারাল অ্যান্ড রুরাল ট্রান্সফরমেশন ফর নিউট্রিশন, এন্টারপ্রেনারশিপ অ্যান্ড রেজিলিয়েন্স ইন বাংলাদেশ (পার্টনার)’ প্রকল্পের মাধ্যমে গঠিত ২৫টি কৃষক গ্রুপে দেওয়া হচ্ছে উত্তম কৃষি চর্চা (GAP) বিষয়ক প্রশিক্ষণ।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের রবি মৌসুম থেকে এই প্রকল্পের অধীনে বায়োপেস্টিসাইড প্রদর্শনী চালু হয়। এরই অংশ হিসেবে কৃষক নুরুল ইসলাম চিচিঙ্গা চাষে বায়োপেস্টিসাইড, ফেরোমন ট্র্যাপ ও আঠালো ফাঁদ ব্যবহার করে বিষমুক্ত সবজি উৎপাদনে সফলতা অর্জন করেন। তাঁর উৎপাদিত সবজি ভোক্তাদের কাছে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।
আজ সোমবার দুপুরে সরেজমিনে উপজেলার জাহাঙ্গীরপুর গ্রামের ওই কৃষকের চিচিঙ্গা ক্ষেতে গিয়ে দেখা যায়, পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক নুরুল ইসলাম। পরিপক্ব চিচিঙ্গা বিক্রির জন্য ক্ষেত থেকে সংগ্রহ করছেন তিনি।
কৃষক নুরুল ইসলাম বলেন, “আমি ২০ শতাংশ জমিতে জৈব পদ্ধতিতে চিচিঙ্গা আবাদ করেছি। পার্টনার প্রকল্পের প্রশিক্ষণ ও কৃষি কর্মকর্তাদের নিয়মিত পরামর্শে আমি ভালো ফলন পেয়েছি এবং গত এক বছরে প্রায় এক লাখ টাকা আয় করেছি। এখন অনেকেই আমার দেখাদেখি বিষমুক্ত সবজি চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।”
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ইয়াসমিন আক্তার বলেন, “আমরা উপজেলার কৃষকদের পরিবেশবান্ধব ও স্বাস্থ্যসম্মত কৃষি পদ্ধতিতে উদ্বুদ্ধ করতে কাজ করছি। পার্টনার প্রকল্পের আওতায় জৈববালাইনাশক, ফেরোমন ট্র্যাপ ও আঠালো ফাঁদের ব্যবহার জনপ্রিয় হচ্ছে। কৃষক নুরুল ইসলাম এখন খানসামায় বিষমুক্ত সবজি চাষের রোল মডেল হয়ে উঠেছেন।”
নুরুল ইসলামের এই সফলতা এখন উপজেলার অন্যান্য কৃষকদের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি বর্তমানে খানসামা উপজেলায় নিরাপদ সবজি উৎপাদনের একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।